যাদের রক্তের বিনিময়ে দুই যুগের পাকিস্তানি শাসনের অবসান ঘটেছিল,বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটেছিল বাংলাদেশ নামের নতুন এক রাষ্ট্রের, মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের ৪৪তম বার্ষিকীতে সেই বীর সন্তানদের স্মরণ করছে জাতি।
বুধবার ভোরে সুর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে (পুরনো বিমানবন্দর) ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা।
সকাল সাড়ে ৬টার পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে সেই মুক্তিসেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান, যারা প্রাণের বিনিময়ে ছিনিয়ে এনেছিল বাংলার স্বাধীনতার সূর্য।
তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল এ সময় সালাম জানায়। শহীদদের স্মরণে বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর।
জাতির যে বীর সন্তানদের আত্মত্যাগে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম, কিছুটা সময় নিরবে দাঁড়িয়ে একাত্তরের সেই শহীদদের স্মরণ করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা স্মৃতিসৌধে ফুল দেন।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসাবে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে পরে আবারও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা।
জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের নিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য ও কূটনীতিকরাও শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে স্মরণ করেন একাত্তরের শহীদদের।
ভিআইপিদের শ্রদ্ধা জানানোর পর জাতীয় স্মৃতিসৌধ খুলে দেয়া হয় সবার জন্য; পতাকা আর ফুল হাতে জনতার ঢল নামে সৌধ প্রাঙ্গণে। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে শহীদের স্মৃতির মিনার।
১৪ দলের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানিরা পরাজিত হলেও তাদের দোসররা দীর্ঘদিন এ দেশে ‘অশুভ তৎপরতা’ চালিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার চেষ্টা করেছে।
“যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করা পর্যন্ত জাতিকে অভিশাপমুক্ত করার সুযোগ ছিলো না।… শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করে ৩০ লাখ শহীদের আত্মার অভিশাপ থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ হয়েছে এখন।”
যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতকেও ‘নিষিদ্ধ করা হবে’ জানিয়ে শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখার পরামর্শ দেন হানিফ।