বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘৩৩তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে। মহাকাশে আমরা স্যাটেলাইট পাঠিয়েছি। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। বাঙালিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’
শনিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে পাবনার রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুকেন্দ্রে সুধিসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।পাবনার রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণে কনক্রিট ঢালাই কাজ উদ্বোধন করে তিনি এই আশ্বাসবাণী দেন।
বাংলাদেশ পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে হাত দেওয়ার পর থেকে ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশে এধরনের প্রকল্পে দুর্ঘটনা ঘটলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে।
‘কোনো কাজ করতে গেলে অনেক কথা হয়’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এখানে উদ্বেগের কিছু নেই। এখন পারমাণবিক বিদ্যুতে উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। যার ফলে এখানে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হবে- সেটা আমরা মনে করি না। বিশেষ করে নিরাপত্তার দিকটা আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছি।”
এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা, নিরাপত্তা নিশ্চিত ও রক্ষণাবেক্ষণ ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মনে করেন তিনি।
এক্ষেত্রে রাশিয়া ও ভারত বাংলাদেশের জনবলকে প্রশিক্ষিত করছে বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ নিরাপত্তাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে একটি ইউনিট গড়ে তোলা হয়েছে।
পারমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ এই বিদ্যুকেন্দ্রর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের পুলিশ, আর্মি বাহিনীসহ সব বাহিনীই কাজ করবে। আমরা পরিকল্পিতভাবেই এই বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এখানে রাশিয়ার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যেকোনও দুর্যোগ মোকাবেলায় রাশিয়া আমাদের পাশে থাকবে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির পুতিনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যে কোনও সমস্যায় তিনি আমাদের পাশের থাকার কথা জানিয়েছেন।’
মহাকাশে বাংলাদেশের স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ বিশ্বে আমরা মর্যাদাপূর্ণ জাতি হিসেব চলবো। ‘কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’ আমাদের এই নীতিতে চলতে হবে। আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে নিয়ে যাবো। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হয়েছি। ২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে বাংলাদেশ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর এটি স্বপ্ন ছিল। আমরা তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে চলেছি। তিনি বলেন, ‘ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ২০২১ সাল পর্যন্ত আমাদের যেমন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। তেমনি ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্তও আমাদের পরিকল্পনা আছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাবো। ’
এর আগে সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে ডিজিটাল বোতাম চেপে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের প্রথম কংক্রিট ঢালাই কাজের উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন, রাশিয়া কনফেডারেশনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইউরি ইভানোভিচ বোরিসভ, বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি প্রমুখ।