শুক্রবার, মে ৩১, ২০২৪

বালাগঞ্জের ফতুরখাড়া সেতু নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম

যা যা মিস করেছেন

সিলেট:
সিলেটের বালাগঞ্জে একটি সেতু নির্মাণে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাজ সম্পন্ন করার পায়তারা করছে সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, লোক চক্ষুর আড়ালে যেন তেন ভাবে রাতের আঁধারে ব্রীজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে ও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সূত্রে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এর আওতাধীন সিলেট সড়ক বিভাগের অধিনে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে আইডি নং- ৭৪৩৮৭৩ টেন্ডারের মাধ্যমে সিলেট সড়ক বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. ফজলে রব্বে বালাগন্জের ফতুরখাড়া পিসি গার্ডার ব্রীজের নির্মাণের টেন্ডার আহবান করেন। সেই টেন্ডারের আলোকে ২০২৩ সালের ২৭ মে বালাগঞ্জ উপজেলার সিলেট সুলতানপুর বালাগঞ্জ সড়কের ২১তম কি.মি. এ ৭৬.০১ মিটার দৈর্ঘ্যের ফতুরখাড়া পিসি গার্ডার ব্রীজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
উক্ত ব্রীজের প্রাক্ষলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা। ব্রীজ নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিযুক্ত হয় জনজেবি নামক প্রতিষ্ঠান।
কাজের ডিজাইন ও ড্রয়িং অনুযায়ী দেখা যায়, ফতুরখাড়া গার্ডার ব্রীজে ৪৫মিটার করে ৩২টি পাইল করার কথা থাকলেও এতে বেশিরভাগ পাইল ২৪ মিটার আবার কয়েকটি ৩৬ মিটারও করা হয়েছে।
যাতে করে ২১ মিটার ও ৯ মিটার করে পাইল কম দেয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জনজেবি রডের যে খাচা তৈরি করেছিল তা মেপে দেখা যায় প্রত্যেকটি ছিল ১২ মিটার করে।
এলাকাবাসী জানান, ব্রীজ নির্মাণে পাইল এর দৈর্ঘ্য কম দেয়ার ফলে ব্রীজ খুবই দূর্বল হয়ে যাবে, বেশি গাড়ি চলাচল করলে ব্রীজ ভেঙে যেতেও পারে।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়মের কোন তোয়াক্কা না করেই রাতের অন্ধকারে পাইলের কাজ করেছেন যাতে সংবাদকর্মী ও এলাকাবাসী পাইলের গভীরতা সম্পর্কে জানতে না পারে। সবগুলো পাইলের কাজই গভীর রাতে সম্পন্ন করা হয়েছে।
সংবাদকর্মীসহ স্হানীয়রা উক্ত কাজের তদারকি কর্মকর্তা উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান ও নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন কে রাতের অন্ধকারে ঢালাই এর কাজ ও পাইলের গভীরতা কম দেয়ার বিষয়ে অবগত করলেও তারা উদাসীনতা দেখান। তারা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে তাদেরকে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পাইল ঢালাই কাজে রড- সিমেন্ট পরিমাণে কম দেয়ার জন্য ও পাইলের গভীরতায় অনিয়ম করার লক্ষ্যে সওজ কর্তৃপক্ষ টিকাদারি প্রতিষ্ঠান উভয়ে পরিকল্পিতভাবে অনিয়ম-দূর্নীতি করার জন্য রাতের অন্ধকারে সকল পাইল ঢালাই এর কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। কোন একটি পাইল ঢালাইয়ের সময়ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপযুক্ত কোন কর্মকর্তা সরেজমিন উপস্থিত ছিলেন না।
অথচ নিয়ম অনুযায়ী উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী পাইল ঢালাই চলাকালীন সময়ে সরেজমিন উপস্থিত থাকতে বাধ্য। ৩২ টি পাইল ঢালাইয়ে অনিয়ম দূর্নীতির কোন অন্ত ছিল না।
এখন তারা পাইল ইন্টিগ্রিটি টেস্ট না করেই পরবর্তী কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় রহমতপুর এলাকার বাসিন্দা আল আমিন বলেন, ফতুরখাড়া ব্রীজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্যপক অনিয়ম করেছে। ব্রিজের পাইলে রডের খাচা পরিমাণের চেয়েও কম দিয়েছে এবং রাতের অন্ধকারে কাজ করেছে।

আলাপকালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক লুৎফুর রহমান বলেন, আমি উক্ত কাজ পরিদর্শনে যাইনি, আমার জানামতে কোন দুর্নীতি-অনিয়ম হয়নি আর যদি কোন দুর্নীতি অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা করেছেন।

সিলেট সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেনের কাছে এই ব্রিজের দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুর্নীতি হয়ে থাকলে আপনারা নিউজ করেন।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security