শুক্রবার, জুলাই ২৬, ২০২৪

নড়াইলে বিলে ফাঁদ পেতে চলছে অতিথি পাখি শিকার

যা যা মিস করেছেন

জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল:

নড়াইলের বিভিন্ন বিলে ফাঁদ পেতে অতিথি পাখি শিকার চলছে। শীত মৌসুমের ৩-৪মাস নড়াইলের ইছামতি বিল, পিরোলী বিল, চাপুলিয়া বিল, নলাবিল, বাবুপুর বিলসহ বড়ো বড়ো বিলে নানা পদ্ধতিতে নানা প্রজাতির হাঁসপাখি, সরাল, কালকুচ, কালিম, সারসসহ বিভিন্ন জাতের পরিযায়ী পাখি শিকারের অভিযোগ রয়েছে।

শীত মৌসুমজুড়ে পাখি শিকারিদের ব্যাপক অপতৎপরতার ফলে বিলখাল নদীনালা বিধৌত সবুজশ্যামল এ জেলার অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন খাতের অত্যতম অনুসঙ্গ পরিযায়ী পাখির বিভিন্ন অভায়াআশ্রম হুমকির মুখে পড়ে উদ্বেগজনক হারে কমে গেছে পাখি সমাগম।

পরিযায়ী এসব পাখীর উন্মুক্ত প্রান্তরে অবাধ বিচরনের মধ্যদিয়ে প্রকৃতিতে শোভা বর্ধনের কথা থাকলেও শিকারির নিষ্ঠুরতায় এভাবে বস্তাবন্দি হয়ে কেজিদরে বিকি-কিনির পরে ভোজন রসিকদের রসনার খোরাক হতে হচ্ছে। বিলমাঠে খাদ্যের সন্ধানে এসে বরণ করতে হচ্ছে নির্মম পরিনতি।

শীত মৌসুমে নড়াইলের বড়ো বড়ো বিল জলাশয়ের অভায়াশ্রম ঘিরে বরাবর অতিথি পাখির সমাগম ঘটে। সেই সঙ্গে শুরু হয় পাখী শিকারিদের ঘৃন্য তৎপরতা। এসব বিলে বিভিন্ন সময় নানা পদ্ধতিতে পাখি শিকার করা হলেও বর্তমানে শিকারিদের কাছে ফাঁদপেতে পাখির ডাক বাজিয়ে পাখি শিকার অত্যন্ত জনপ্রিয়। এ পদ্ধতিতে বিলের বিস্তীর্ণ প্রান্তরজুড়ে সারিসারি খুটি গেড়ে তাতে একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চক্রাকারে নায়লনের মজবুত রশির স্থায়ী ফাঁদ তৈরি করে দেয়া হয়।

মৌসুম জুড়ে পেতে রাখা সেই ফাঁদে পাখিদের আকৃষ্ট করতে নেয়া হয় অভিনব পদ্ধতি, চতুর শিকারিরা ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন পাখির ঢাক ডাউনলোড করে ফাঁদের মাঝ বরাবর স্থাপত করা মাচানে সাউন্ডবক্স বসিয়ে পাখির অনাগোনা বুঝে সেই গোত্রীয় পাখির ঢাক চালিয়ে দেয়। সহজাত প্রবৃত্তির বসে স্বগোত্রীয় পাখিরা সেই ঢাক লক্ষ করে ছুটে গিয়ে আটকে পড়ে মরন ফাঁদে।

এভাবে প্রতিদিন রাত ৮টার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত চলে অভিনব কায়দায় পাখি নিধনের কর্মযজ্ঞ। তারা জানায়, রাতে শিকার করা এসব পাখি সূর্যের আলো দেখার আগেই বিক্রি হচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু ক্রেতার কাছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পেশাদার পাখি শিকারি বলেন, বাজারে অতিথি পাখির চাহিদা খুব বেশি। ধরতে পারলে বিক্রিতে কোন সমস্যা নেই। অনেকেই অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখেন। ফলে ভোর রাতেই পাখি তাদের বাড়িতে পৌঁছে যায়।

স্থানীয়রা জানান, জেলায় এভাবে নির্বিচারে পাখি নিধনের ফলে ব্যাপকভাবে কমে গেছে পরিযায়ী পাখিদের সমাগম। পাখি শিকার বন্ধে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই নড়াইলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম অনুসঙ্গ পরিযায়ী পাখি প্রকৃতি থেকে অচিরেই হারিয়ে যাবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, নড়াইল জেলা পাখির নিরাপদ আবাসন নিশ্চিতে ও পাখির স্বাধীন চলাচলে প্রতিবন্ধকতাসহ পাখি শিকারের যে কোন অপতৎপরতার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক দৃড় অবস্থান ব্যক্ত করেন তিনি বলেন, অতিথি পাখি শিকারে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security