বৃহস্পতিবার, জুলাই ২৫, ২০২৪

বিএসএফের বাঁধা কাটিয়েও কাজে গাফিলতিতে সড়ক চাষী জমিতে পরিনত

যা যা মিস করেছেন

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

মৌলভীবাজারের জুড়ীর দীর্ঘদিনেও ফুলতলা-বটুলী চেকপোষ্ট রাস্তার কাজ শুরু হয়নি। জুড়ী-ফুলতলা পর্যন্ত মূল সড়কের কাজ ৪ বছরেও যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সমাপ্ত করেনি, সেই প্রতিষ্ঠানকেই দেওয়া হয়েছে আরও ১০০ মিটারের বাড়তি কাজ। রাস্তার সংস্কার কাজ কচ্ছপ গতিতে খানাখন্দে ভরা মূল সড়ক যেন এখন রূপান্তরিত হয়েছে চাষের জমিতে। আর এতে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দা। কাজে গাফিলতির ব্যবস্থার পরিবর্তে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আরো ১০০ মিটার বাড়তি কাজ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় ভুক্তভোগীদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জুড়ী-ফুলতলা বটুলী চেকপোষ্ট পর্যন্ত ২৩ কি:মি: দীর্ঘ সড়কের পুরোটাই ভেঙেচুরে বেহাল দশায় পরিণত হয়। ২০১৮ সালের ২৯ মে একনেক এর সভায় জেলা মহাসড়ক সমূহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (সিলেট জোন) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সড়ক বিভাগ মৌলভীবাজারের বাস্তবায়নে জুড়ী-ফুলতলা (বটুলী) (জেড-২৮২৩) জেলা মহাসড়কটি ১২ ফুট থেকে ১৮ ফুটে উন্নীতকরণসহ মজবুতকরণ কাজের জন্য ৬৯ কোটি টাকা ব্যয় কাজের অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে তা ৭৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। দুই বছরে কাজ সম্পাদনের জন্য ওয়াহিদ কন্সট্রাকশন নামক ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই রাস্তার কাজ পায়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এর কার্যাদেশ হয়। এরপর থেকে কাজ নিয়ে টালবাহানা শুরু করে এ প্রতিষ্ঠানটি। তিন মেয়াদে কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও ৪ বছরেও কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। বিভিন্ন সময় কাজে অনিয়মের অভিযোগে এলাকাবাসী মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্থানীয় সংসদ, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়। রাস্তা নিয়ে কোন ধরণের অনিয়ম সহ্য করা হবে না বলে মন্ত্রী আশ্বস্ত করলেও এখনও পর্যন্ত সমাপ্ত হয়নি কাজ। ৩ দফায় মেয়াদ বৃদ্ধির চুক্তির সর্বশেষ মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলিত মাসের ২৮ তারিখ। অথচ প্রায় এক চতুর্থাংশ কাজ এখনও বাকি রয়েছে।
এদিকে, ফুলতলা থেকে বটুলী চেকপোষ্ট জিরো পয়েন্টের কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা মাটি কেটে বক্স করে রাখেন। বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত হয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হলে স্থানীয় জনসাধারণ ইট ফেলে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করেন। সম্প্রতি আবারও শ্রমিকরা রাস্তায় বক্স কাটিং করে ফেলে রাখায় বেহালদশা হয়ে পড়েছে। জিরো পয়েন্ট থেকে রাস্তার কাজ করার জন্য সওজ বিজিবি’র সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দেয়। বিজিবি -বিএসএফের কাছ থেকে অনুমতি নিলেও কাজ শুরু হয়নি। মাসে প্রায় কোটি টাকার জিনিসপত্র এ রাস্তা দিয়ে ভারত-বাংলাদেশে আমদানি-রপ্তানি হয়। দেশের স্বনামধন্য কোম্পানীগুলোর পণ্য ভারতে রপ্তানি করা হলেও কিছু কাঁচামাল আমদানি করা হয়। অনেক সময় গাড়িগুলো গর্তে, খানাখন্দে আটকে গেলে শ্রমিকরা ধাক্কা দিয়ে রাস্তা পার করে দেন বলে ও এমন অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া এ রাস্তা দিয়ে কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াত রয়েছে। রাস্তা সংস্কারে এসব এলাকার মানুষ একাধিকবার মানববন্ধন করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে বাসিন্দা আবু হানিফ জানান, এ রাস্তা দিয়ে এলাকার মানুষের যাতায়াতে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। দীর্ঘ দিন থেকে রাস্তায় কাজের নামে মাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে। কোন ডেলিভারী রোগীকে এ রাস্তা দিয়ে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই রাস্তায় ডেলিভারির আশংকা থাকে। ব্যবসায়ী লিজন আহমদ জানান, বছরে ১২-১৪ কোটি টাকার মালামালের গাড়ি এ রাস্তা দিয়ে যাওয়া-আসা করে প্রতিনিয়ত। বারবার আবেদন করার পরও রাস্তাটি সংস্কার করা হচ্ছে না। সরকারের রাজস্ব আদায়ের জন্য হলেও রাস্তার কাজ দ্রুত সমাপ্ত করা উচিত।
ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা মির্জা বেগ বলেন, এই মাসের পর আর কাজ বাকি থাকবে না, নতুন করে জিরো পয়েন্টের (আরো ১০০ মিটার) কাজ করার জন্য সওজ কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে বলেছে, সেগুলো ও আমরা করে দেব।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ মৌলভীবাজারের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম জানান, ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের কিছু কাজ বাকি ছিল, চলমান রয়েছে। জিরো পয়েন্ট থেকে প্রায় ১০০ মিটারের মত রাস্তায় কাজের অনুমতি ছিলনা, অনুমতি এসেছে সেগুলোও তারা করবে বলে জানান।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security