ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে ব্রিটিশ গায়ক ডেভিড বোয়ি গত সোমবার না ফেরার দেশে চলে গেছেন। গায়ক, সুরকার, গীতিকার, অভিনয়শিল্পী, স্যাক্সোফোন বাদক-শিল্পের প্রায় সব শাখাতেই কাজের অভিজ্ঞতা আছে এই শিল্পীর। তবে এসব পরিচয়ের বাইরেও এই শিল্পীর আরেকটি গুণের কথা অনেকেরই অজানা। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম মিউজিক বা সংগীত বন্ড চালুর উদ্যোক্তা হলেন ডেভিড বোয়ি।
শিল্পীসত্তার পাশাপাশি ব্যবসায়িক বুদ্ধিতে যে ডেভিড বোয়ি কম যান না, তারই উদাহরণ ‘বোয়ি বন্ড’। ১৯৯৭ সালে বোয়ি নামে চালু হওয়ার পর প্রথমেই বাজিমাত করে বিশ্বের প্রথম এই সংগীত বন্ড। শুরুতেই এই বন্ড থেকে উঠে আসে ৫ কোটি ৫৫ লাখ মার্কিন ডলার। বন্ডের মূলধন ছিল ১৯৯০ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত ডেভিড বোয়ির বিভিন্ন গানের অ্যালবাম।
ডেভিড বোয়ির এই বন্ডের মেয়াদ ছিল ১০ বছরের। সুদও ছিল বেশ আকর্ষণীয়, ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। ভালো মানের ১০ বছর মেয়াদি অন্যান্য বন্ডের সুদের হার যেখানে ৬ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ শতাংশ, বোয়ি বন্ডের এমন চড়া সুদের লোভে অনেকে এতে বিনিয়োগ করেন।
উদ্যোগটি বোয়ির হলেও এই বন্ড চালুর পেছনের মানুষটি হলেন ডেভিড পুলম্যান। তাঁর দাবি, এর আগের বাজারে নানা ধরনের বন্ড থাকলেও সংগীত বা গানকে কেন্দ্র করে এমন বন্ড বিশ্বের আর কোথাও ছাড়া হয়নি। এরপর পুলম্যানের উদ্যোগে আরও বেশ কিছু সংগীত বন্ড যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ছাড়া হয়। উল্লেখযোগ্য শিল্পীর মধ্যে আছেন জেমস ব্রাউন, অ্যাশফোর্ড অ্যান্ড সিম্পসন, মারভিন গাই প্রমুখ। জনপ্রিয় তারকাদের খ্যাতি ও যশ কাজে লাগিয়ে বাজারে ছাড়া এই বন্ডগুলো ‘সেলিব্রিটি বন্ড’ নামেও পরিচিত।
তবে বোয়ি বন্ড নিয়ে আশা ছাড়ছেন না পুলম্যান। ডেভিড পুলম্যান বোয়ি বন্ডকে অভিহিত করেন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ড ইউএস ট্রেজারিজে বিনিয়োগের চেয়েও নিরাপদ হিসেবে। পুলম্যান বলছেন, সিডি বিক্রি থেকে আয় কমলেও এই বন্ডকে কেন্দ্র করে আয়ের অন্যান্য উৎস বাড়ছে। বোয়ির মৃত্যুর পর আয়ের উৎস সামনে আরও বাড়বে, কারণ তাঁর গান এখন নানাভাবে ব্যবহৃত হবে, যত বেশি ব্যবহৃত হবে ততই লাভ বাড়বে।