পৌরসভার ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট বলেছে, সরকার তাদের ‘অনুগত’ ইসিকে ব্যবহার করে জনগণের রায় ‘ছিনতাই’ করেছে। ‘জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করায়’ সরকারের এবং ‘সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ’ হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেছে তারা।
পৌর ভোটের পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট পৌর নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছে। একই সঙ্গে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা করা এবং সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের ব্যর্থতার জন্য আমরা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।”
অনিয়ম ও সংঘর্ষের কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনার মধ্যে বুধবার প্রথমবারের মতো দেশে দলীয়ভাবে পৌরসভা নির্বাচন হয়। ২৩৪টি পৌরসভার মধ্যে এ পর্যন্ত ২২৭টি মেয়র পদের বেসরকারি ফল ঘোষণা করা হয়েছে।
এতে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক জিতেছে ১৭৭টিতে, বিএনপির প্রার্থীরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জয় পেয়েছেন ২২টিতে।
পৌর ভোটে বিএনপির ‘ভরাডুবির’ প্রতিক্রিয়ায় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “নীল নকশার পৌর নির্বাচনে সরকার তাদের অনুগত নির্বাচন কমিশন, দলীয়করণকৃত প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে জনগণের রায়কে ছিনতাই করে এক নজীরবিহীন ত্রুটিপূর্ণ ও অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রহসন করেছে।
“সরকারের অগণতান্ত্রিক, ফ্যাসিবাদী আচরণ ও নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের ব্যর্থতায় এ কথাই প্রমাণিত হয়েছে যে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনই গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে না। গতকালের পৌর নির্বাচন সেই সত্যেরই প্রামাণিক চিত্র হিসেবে গোটা জাতি সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।”
স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে বিএনপি ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ তুললেও নির্বাচন কমিশন বলছে, ‘বিচ্ছিন্ন’ কিছু ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগও পৌর ভোট নিয়ে সন্তোষ জানিয়েছে।
বুধবার বিক্ষিপ্ত গোলযোগ এবং জালভোটের অভিযোগের মধ্যে এসব পৌরসভার সাড়ের তিন হাজার কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌরসভায় সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়।
অনিয়ম ও নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের জন্য নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভায় ভোট (১২ কেন্দ্র) স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১৮টি পৌরসভার ৩৮টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হয়, যেগুলোতে পুনঃভোট হবে।
তবে বুধবার বিএনিপ ও ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে অন্তত ২০০ পৌরসভার সহস্রাধিক ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগের তুলে সেগুলোতে পুনঃভোটের দাবি জানানো হয়।