বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪

শ্রীলঙ্কা বধ করলো টাইগাররা

যা যা মিস করেছেন

এশিয়া কাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে ২৩ রানে হারায় বাংলাদেশ। ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪৭ রান করেছিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা করে ৮ উইকেটে ১২৪।

bangladesh cricket team the mail bd

ভারতের কাছে হেরে শুরু করলেও টানা দ্বিতীয় জয়ে মাশরাফিরা টিকিয়ে রাখল ফাইনালের সম্ভাবনা।

২৬ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে লড়ার মতো রান এনে দিয়েছে সাব্বির রহমানের ৮০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে বড় ভূমিকা রেখেছেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। পেসাররা যথারীতি ছিলেন দুর্দান্ত। দুর্দান্ত টিম পারফরম্যান্সের ফসল বাংলাদেশের লঙ্কা-জয়।

বাংলাদেশ উইকেট পেতে পারত প্রথম ওভারেই। কিন্তু স্লিপে ক্যাচ ছাড়েন সৌম্য সরকার। আগের ম্যাচেও তাসকিন আহমেদের বলে দুটি ক্যাচ ছেড়েছিলেন সৌম্য। এবার ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই হাতছাড়া করলেন দিনেশ চান্দিমালের ক্যাচ।

একটু পরই অসাধারণ এক ক্যাচে কিছুটা প্রায়শ্চিত্ত করেন সৌম্য। বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই সাকিব ফেরান তিলকরত্নে দিলশানকে। ডাউন দা উইকেটে খেলে বল আকাশে তুলেছিলেন দিলশান, মিড অফ থেকে অনেকটা দৌড়ে লং অনে দুদান্ত ডাইভিং ক্যাচ নেন সৌম্য (১২)।
তিনে নেমে শিহান জয়াসুরিয়া আল আমিন হোসেনকে এক ওভারেই চার ও ছক্কা মেরে দূরে ঠেলেন চাপ। তবে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপটা আস্তে আস্তে আবার ফিরিয়ে আনে বাংলাদেশ। সেটিরই পুরষ্কার দ্বিতীয় উইকেট। মাহমুদউল্লাহকে রিভার্স সুইপ খেলে আউট চান্দিমাল (৩৭ বলে ৩৭)।

৫৬ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙার পরপরই আরেকটি উইকেট। সাকিবের বলে স্টাম্পড জয়াসুরিয়া (২৬)।

মুস্তাফিজ আক্রমণে ফিরেই তুলে নেন বিপজ্জনক থিসারা পেরেরাকে। দু দলের সবশেষ সিরিজে দুই ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে শেষ বলে জিতিয়েছেল এই অলরাউন্ডার। এবার মুস্তাফিজের ফুল লেংথ বলে এলবিডব্লিউ ৪ রানে।

বেশ কিছু সময় উইকেটে থেকেও ইনিংসকে গতি দিতে না পারা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস আউট হয়েছেন হাঁসফাঁস করতে করতে। শ্রীলঙ্কার সম্ভাবনারও মৃত্যু তাতে।
শেষ ওভারে দুটিসহ ৩৪ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন আল আমিন। ২১ রানে দুটি সাকিব। মাশরাফি-মাহমুদউল্লাহ পেয়েছেনন একটি করে। একটি উইকেট পেলেও আবারও অসাধারণ বোলিং বৈচিত্রে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে মুস্তাফিজুর রহমান।

চোট নিয়ে বিশ্রামে যাওয়া মালিঙ্গার জায়গায় লঙ্কানদের নেতৃত্ব দেন ম্যাথিউস। সবুজ উইকেট চেহারা বদলে এদিন প্রায় সাদা, চেনা ব্যাটিং উইকেট। নতুন বলে তবু বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দিলেন ম্যাথিউস।

বাংলাদেশের দুই ওপেনারই আউট হয়েছেন রানের খাতা খোলার আগে। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরার মোহাম্মদ মিঠুন এবার ফিরে যান সবার আগে। ম্যাথিউসের ভেতরে ঢোকা বল বুঝতেই পারেননি মিঠুন, লাইনে না খেলে এলবিডব্লিউ (০)।

দু:সময়ের প্রহরকে দীর্ঘায়িত করে সৌম্য সরকার ফেরেন নুয়ান কুলাসেকেরার বলে দৃষ্টিকটু এক শটে (৪)।

এই নিয়ে দ্বিতীয়বার একই ম্যাচে শূন্য রানে আউট হলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বারবাডোজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রান করতে পারেননি ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ আশরাফুল।

৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ছিল ২ উইকেটে ৬। রান খরা দূর হয় সাব্বিরের ব্যাটে, তৃতীয় ওভারে কুলাসেকেরাকে তিনটি চার ও এক ছক্কায় নেন ১৮ রান।
কিন্তু একটু গুছিয়ে আসার আগেই আরেকটি আঘাত, সাব্বিরের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট মুশফিকুর রহিম (৪)।

নিয়মিত উইকেট হারানোতেও ভড়কে না গিয়ে সাব্বির এক প্রান্তে খেলে গেছেন অসাধারণ সব শট। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশে তোলে ৪১ রান, তাতে সাব্বিরই ১৯ বলে করেন ৩৫। বাকিরা মিলে ১৭ বলে ৬!

পাওয়ার প্লে পর একটু স্লথ হয়েছিল রানের গতি। নবম থেকে দ্বাদশ, এই চার ওভার আসেনি বাউন্ডারি। সাব্বিরের ব্যাটেই আবার প্রাণ পায় ইনিংস। ব্যাটিং ফর্ম খোঁজার লড়াইয়ে থাকা সাকিব দিয়ে যান সঙ্গ।

ভাগ্যকেও খানিকটা পাশে পান সাব্বির। শিহান জয়াসুরিয়াকে স্লগ করে বল পাঠিয়েছিলেন মিড উইকেট সীমানায়, অভিজ্ঞ চামারা কাপুগেদারা হাত ছুঁইয়ে বল পাঠিয়ে দেন ওপারে! ওই ছক্কাতেই অর্ধশতক স্পর্শ করেন সাব্বির, ৩৮ বলে। টি-টোয়েন্টিতে এটি তার তৃতীয় ফিফটি।

বেঁচে গিয়ে পরের দুই বলেই আরও দুটি বাউন্ডারিতে লঙ্কানদের পোড়ান সাব্বির। দুশমন্থ চামিরাকে দারুণ এক পুলে উড়িয়ে দেন মিড উইকেটের ওপর দিয়ে। পরের বলে একই জায়গা দিয়ে আবার ছক্কা মারার চেষ্টায় ধরা পড়লেন সীমানায়। দলের রান তখন ১০৮, সাব্বিরের একারই ৮০! ৫৪ বলের ইনিংসে ১০টি চার ও ৩টি ছক্কা।
সাব্বিরের বিদায়ের পর দারুণ দুটি চারে ডানা মেলার চেষ্টা করেছিলেন সাকিব। পারলেন না ধৈর্য্যশীল ইনিংসটা দারুণ ভাবে শেষ করতে। ফিরলেন চামিরার বাউন্সারে (৩৪ বলে ৩২)।

বাংলাদেশের শেষটা তবু খারাপ হয়নি, মাহমুদউল্লাহ যে ছিলেন। আগের ম্যাচের মতোই জ্বলে ওঠেন তিনি শেষ দিকে, ১২ বলে অপরাজিত থাকেন ২৩ রানে।

ইনিংস শেষে টিভি সাক্ষাতকারে সাকিব বলেছিলেন, রানটা ১৬০ হলে ভালো হতো। কিন্তু দিন বদলের পালায় বোলিং যে এখন বাংলাদেশের বড় শক্তি!

১৪৭ রান করেও এই অনায়াস জয় বিশ্বকাপের আগে মাশরাফিদের জন্য আত্মবিশ্বাসের দারুণ জ্বালানি!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪৭/৭ (মিঠুন ০, সৌম্য ০, সাব্বির ৮০, মুশফিক ৪, সাকিব ৩২, মাহমুদউল্লাহ ২৩*, নুরুল ২, মাশরাফি ২; চামিরা ৩/৩০, ম্যাথিউস ১/৮, কুলাসেকারা ১/৪৪)

শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১২৪/৮ (চান্দিমাল ৩৭, দিলশান ১২, জয়াসুরিয়া ২৬, ম্যাথিউস ১২, থিসারা ৪, সিরিবর্ধনা ৩, শানাকা ১৪, কাপুগেদারা ১২*, কুলাসেকারা ০, চামিরা ১*; আল আমিন ৩/৩৪, সাকিব ২/২১, মাহমুদউল্লাহ ১/১৪, মাশরাফি ১/১৭, মুস্তাফিজ ১/১৮)

ম্যাচ সেরা: সাব্বির রহমান (বাংলাদেশ)

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security