বুধবার, জুন ২৬, ২০২৪

গোলাপ গ্রাম রাঙাবে ভালোবাসা দিবস

যা যা মিস করেছেন

বসন্তের প্রথম দিন পয়লা ফাগুন আর ভালবাসা দিবস এই দুই দিবস এখন থেকে পালিত হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। আর এই বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস রাঙাতে সাভারের বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রামের চাষিদের ব্যস্ততা বেড়েছে।

দুই বড় দিবসকে কেন্দ্র করে দিনে লাখ টাকার ফুল বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এখানকার চাষিরা। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, বিরুলিয়ার সাদুল্যাপুর, কমলাপুর, শ্যামপুর, আক্রান, মোস্তাপাড়া, বাগ্নিবাড়িসহ বিশ গ্রামের বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ হয়।

ইউনিয়নের প্রায় তিনশো হেক্টর জমিতে গোলাপ, রজনীগন্ধ্যা, গ্লাডিওলাস ও জারবেরা প্রজাতির ফুল চাষ হচ্ছে। তবে আড়াইশো হেক্টর জমিতে চাষ হয় শুধুমাত্র গোলাপ। এছাড়া বিরুলিয়া, আইঠর ও আকরানসহ বেশ কয়েক গ্রামের প্রায় আট হেক্টর জমিতে জারবেরা ফুলের বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে। তবে বিদেশি এই ফুল চাষ ব্যয়বহুল হওয়ায় শুধুমাত্র বড় ব্যবসায়ীরাই এর চাষ করছেন।

সব মিলিয়ে এই অঞ্চলের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলচাষের সঙ্গে জড়িত। প্রতি বছর অভ্যন্তরীণ ফুলের বাজারে প্রায় ২৫-৩০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয় এখান থেকেই। তবে এ বছর পহেলা ফাল্গুন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা এই তিন দিবস ঘিরে প্রায় তিন কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

চাষিরা জানান, আসন্ন তিন দিবস ঘিরে ফুল কেটে বাজারে নিয়ে আসা এবং পরিচর্যায় মহাব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের তিন বিশেষ দিনকে টার্গেট করে ফুলের বাজার ধরতে এ অঞ্চলের ফুলচাষিরা ব্যাপক প্রস্তুতি নেন। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। আগামি ১৪ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকেই চাষিরা ফুল কেটে বাজারে নিয়ে আসছেন। এসব ফুল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাচ্ছেন পাইকার ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিনের মত ফুল বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন চাষিরা। কেউ জমিতে পানি দিচ্ছেন। কেউ ওষুধ ছেটাচ্ছেন। কেউবা আগাছা পরিষ্কার করছেন। স্থানীয় কৃষক আল আমিন জানান, তিন বিঘা জমিতে ফুল চাষ করেছেন তিনি। এবছর শৈতপ্রবাহের কারণে ফুলের ফলন কম হয়েছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন তিনি।

চাষি সজিব হোসেন জানান, প্রতিবছর এ সময় ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়। প্রতি ফুল পাইকারি ২০-৩০ টাকা দরে বিক্রি করা যায়। ফুলের চাষ কিছুটা কম হলেও তা পূরণ করা যাবে। এদিকে গোলাপ গ্রামে নতুন করে চাষ শুরু হয়েছে জারবেরা ফুলের। বিরুলিয়ার আইঠর গ্রামের ফুলচাষি আশরাফ মিয়া ও নাছির উদ্দিন জানান, ৭-৮ বছর আগে ভারত থেকে জারবেরা ফুল নিয়ে আসেন তারা। অন্যান্য এলাকায় এই ফুল চাষ প্রচলন না থাকায় তারা লাভবান হতে থাকেন। পরে জারবেরার চাষ বাড়িয়ে দেন।

ফেব্রুয়ারিতে তিন দিবস থাকায় ফুলের চাহিদা বেড়েছে। আর জারবেরা ১০-১৫ দিন পর্যন্ত সতেজ থাকে বিধায় বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি। গত কয়েক দিন ধরেই তারা ৮-১০ টাকা দরে প্রতি জারবেরা ফুল পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। তবে এই মৌসুমে বর্তমান মূল্যের দ্বিগুণ দামে ফুল বিক্রি করতে পারলে তারা অধিক লাভবান হবেন। তবে সম্প্রতি বিদেশ থেকে কিছু প্লাস্টিক জাতের ফুল আমদানির কারণে তাজা ফুলের বাজারমূল্য কমছে।

বিরুলিয়া ফুল চাষী সমিতির আহ্বায়ক মুহাম্মদ নাসির জানান, শুধু বিরুলিয়ার স্থানীয় বাজারেই প্রতিদিন তিন থেকে চার লাখ টাকার ফুল বিক্রি হয়। ইতোমধ্যে বাজারে ফুলের বিক্রি বেড়েছে। তবে সরকারিভাবে ফুল সংরক্ষণ ও তা রপ্তানি করা গেলে এখানকার চাষিরা অধিক লাভবান হবেন।

সাভারের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত আহমেদ জানান, সাভারের বিরুলিয়ার ফুল অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মেটাতে বড় ভূমিকা রাখে। এখানকার লাল মাটি ফুল চাষের জন্য উপযোগী হওয়া ব্যাপক হারে ফুল উৎপাদন হয়ে থাকে। এছাড়া, চারা রোপণ, বাগান পরিচর্যা ও কীটনাশক প্রয়োগসহ যাবতীয় বিষয়ে চাষিদের সহযোগিতা করা হয়। এখানে বছরে প্রায় ২৫-৩০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়ে থাকে। এছাড়া ফুল সংরক্ষণ ও তা বিদেশে রপ্তানির ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগ নেয়ার চেষ্টা চলছে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security