মন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষাপটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘প্রশাসনিক কারণে’ বুধবার দুপুরে ওসি কে প্রত্যাহারের এই আদেশ দেওয়া হয়।
ফেইসবুকে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে রোববার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত নাসিরনগরে ১৫টি মন্দিরসহ হিন্দুদের শতাধিক বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
এর আগে ঘটনার পরদিন সোমবার সকালে দুটি মামলা হয়। প্রত্যেক মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০০০ থেকে ১২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল করিম।
আজ বুধবার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করে। পরে নাসিরনগর গৌরমন্দিরে এক সমাবেশে রানা দাশগুপ্ত এ কথা বলেন। তিনি বলেন, নাসিরনগরে যা ঘটেছে, সেটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা পরিকল্পিত ঘটনা। এই এলাকায় ৪৪ হাজার হিন্দু ভোটার রয়েছে। তাঁরা যাঁদের ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি করেছেন, সেই জনপ্রতিনিধি আজ কোথায়। গত চার দিনে তিনি একবারও এখানে আসেননি।
হিন্দুদের উদ্দেশে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘এরপর তিনি (জনপ্রতিনিধি) যদি এখানে আসেন, তাহলে আপনারা কালো পতাকা প্রদর্শন করবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাঁচ হাজার, ১০ হাজার বা ২০ হাজার টাকা দিয়ে ক্ষতিপূরণ আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। এ ঘটনা তদন্তে আমরা সুপ্রিম কোটের বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি দাবি করছি।’
সাংবাদিকদের সুলতানা কামাল বলেন, এখানে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। কাজেই তাদের দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে তাতে সত্য উঠে আসবে না। এ কারণে তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কিংবা নিরপেক্ষ নাগরিকদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান। তিনি বলেন, হিন্দুদের মন্দির-বাড়িঘরে যে হামলা হচ্ছে, তা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। যারা এসব হামলা করে, তারা সব সময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।