মার্কিন ইতিহাসের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে হিলারি ক্লিনটন জিতে গেলে, কী পদবি মিলবে বিল ক্লিনটনের তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
বিবিসি বলছে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারের পুরো সময় গুগল সার্চে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন হাজারো ব্যবহারকারী। নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই এ নিয়ে কৌতূহল প্রকট হচ্ছে।
হিলারি হারলে তো সমস্যা হবে না, কিন্তু জিতলে? জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলের স্বামী রসায়নের অধ্যাপক জোয়াকিম সর নিজের নাম ও পরিচয়েই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। একই পরিস্থিতি যুক্তরাজ্যেও। সেখানকার নতুন প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র স্বামী ফিলিপ জন মে ফাইন্যান্সার হিসেবেই পরিচিত। জার্মানি বা যুক্তরাজ্যে অবশ্য তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের সহধর্মিণীর জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক পদবি নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি এক্ষেত্রে ভিন্ন। এখানে পুরুষ প্রেসিডেন্টের স্ত্রীর জন্য ‘ফার্স্ট লেডি’ পদ বিদ্যমান, কিন্তু নারী প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে? দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের নারী গভর্নরের স্বামীদের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক পদ আছে-‘ফার্স্ট জেন্টলম্যান’। যুক্তরাষ্ট্রে এখনও ছয়জন ‘ফার্স্ট জেন্টলম্যান’ আছেন।
ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে হিলারির বক্তব্যের সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিলকে এ নামেই ডেকেছেন ব্যবহারকারীরা।
সে সময় বিল ক্লিনটনকে ‘ফার্স্ট জেন্টলম্যান’ লিখে হ্যাশট্যাগের পরিমাণ ভাইরাল হয়ে পড়েছিল বলে গুগল জানিয়েছে। ওই একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই ৪২তম প্রেসিডেন্টের পরবর্তী পদ নিয়ে জিজ্ঞাসার পরিমাণও ছিল সবচেয়ে বেশি।
সমস্যা হচ্ছে-যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডিকে ‘ফ্লোটাস’ (ফার্স্ট লেডি অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস) শব্দে যতটা শ্রুতিমধুর শোনায় ফার্স্ট জেন্টলম্যান অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটসের সংক্ষিপ্ত রূপ অতটা শ্রুতিমধুর নয়। এজন্য অনেকে হিলারি জিতলে বিলকে ‘ফার্স্ট ডুড’ ডাকার সুপারিশ করেছেন। সেল্টিক ঐতিহ্যের কারণে কেউ কেউ তাকে ‘ফার্স্ট লেডডি’ ডাকারও প্রস্তাব করেছেন।
ডেমোক্র্যাট প্রার্থী প্রেসিডেন্ট হলে সাবেক প্রেসিডেন্টকে কী নামে ডাকা হবে? এ প্রশ্ন থেকে বাদ যাননি খোদ হিলারিও। তিনি বলেন, এক দিন বিল বলছিল, রীতি ভেঙে আমার প্রেসিডেন্ট হওয়া নিয়ে যত আলোচনা হচ্ছে তাতে সে সন্তুষ্ট। নারীদেরকে কেবল প্রেসিডেন্টের স্ত্রী হয়েই থাকতে হবে, এ রীতি ভাঙার জন্যও সে মুখিয়ে আছে। এখন একজন নারী প্রেসিডেন্টের স্বামীকে আপনারা কী নামে ডাকেন, আমরা বরং তা শোনার পরই বিবেচনা করতে পারব। গেল বছরের নভেম্বরে টেলিভিশনে এক লাইভ প্রশ্নোত্তর পর্বে এমনটাই বলেছিলেন হিলারি।
ডেমোক্র্যাট এ প্রার্থীর ধারণা, বিল ক্লিনটন সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ায় তার পদের নামের ক্ষেত্রে এ জটিলতা আরও বাড়বে।
বিলের ব্যাপারে এটা বেশ জটিলই হবে, কেননা এখনও সবাই তাকে সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবেই সম্বোধন করে। এজন্য আমাদের একটা যুত্সই কিছু ঠিক করতে হবে-বলেন হিলারি।
বিল ক্লিনটনকে এ নামেই বেশি ডাকা হতে পারে বলে ধারণা করছে বিবিসিও। সেক্ষেত্রে হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে দুজনকে একসঙ্গে ডাকা হবে মিস্টার অ্যান্ড মিসেস প্রেসিডেন্ট।
হিলারি প্রশাসন চাইলে একে ঘুরিয়েও বলতে পারে-মিসেস অ্যান্ড মিস্টার প্রেসিডেন্ট। তবে যাকে নিয়ে এত আলোচনা সেই বিল ক্লিনটন কিন্তু বেশ নির্ভার। গেল সপ্তাহে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর প্রচারসভায় সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, হিলারি জেতার পর, আমাকে লোকে কী নামে ডাকবে তা নিয়ে আমি মোটেও ভাবছি না। আমি হতে পারি প্রথম স্বেচ্ছাসেবক। সম্ভবত প্রেসিডেন্টের সেরা বিনামূল্যের স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার আশাই করতে পারি-বলেন বিল। বিবিসি।