ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে রিট করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
রবিবার সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইন ও শালিস কেন্দ্রের পক্ষে অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না এ রিট আবেদন দায়ের করেন।
গত ২৯ অক্টোবর নাসিরনগরের হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ দাসের ফেইসবুক পাতায় একটি পোস্ট নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান।
ফেইসবুকে রসরাজ ‘ইসলাম অবমাননা করে’ পোস্ট দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠলে পুলিশ তাকে ৩০ অক্টোবর আটক করে। পরে তাকে রিমান্ডেও নেয় পুলিশ।
এদিকে ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত’ ব্যানারে পরদিন বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয় নাসিরনগর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরে।
এর মধ্যেই একদল লোক নাসিরনগর সদরের দত্তবাড়ির মন্দির, নমঃশূদ্রপাড়া মন্দির, জগন্নাথ মন্দির, ঘোষপাড়া মন্দির, গৌরমন্দির গুঁড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি দেড়শর বেশি ঘরে ভাঙচুরসহ লুটপাট করে।
আহলে সুন্নাতের সমাবেশে ইউএনও মোয়াজ্জেম, স্থানীয় থানার ওসি আব্দুল কাদের বক্তব্য রেখেছিলেন। তাদের বক্তব্য উস্কানিমূলক ছিল বলে দাবি নির্যাতনের শিকার হিন্দুদের। অভিযোগের মুখ পরে ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়।
ওই হামলার পাঁচ দিনের মাথায় শুক্রবার পুলিশের পাহারার পরও নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
“ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং স্বাধীনভাবে ধর্মীয় অনুশাসন পালনে সরকার কি পদক্ষেপ নিচ্ছে, এ বিষয়েও আদলতকে জানানোর নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে,” বলেন তিনি।
ঘটনা তদন্তে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, পুলিশ সদর দপ্তর ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনটি পৃথক কমিটি হয়েছে।
৩০ অক্টোবর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে দুটি, যেগুলোয় প্রায় আড়াই হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।
রোববার পর্যন্ত দুই মামলায় ৫৩ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন নাসিরনগরের নতুন ওসি।