সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে বোরো আবাদ শুরু হলেও বাঁধে ঘষামাজা ছাড়া এখনও হাওরের অধিকাংশ ফসলরক্ষা বাঁধে মাটি ফেলার কাজ শুরু হয়নি। নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর বাঁধের কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। তবে এবার তা হয়নি। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
ক্ষুব্ধ কৃষকদের দাবী দ্রুত কাজ শুরু করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যেন হাওরের বাঁধের কাজ সমাপ্ত করা হয়। প্রতি বছরই আগাম বন্যা থেকে হাওরের বোরো ধান রক্ষা করার জন্য নির্মাণ করা হয় ফসলরক্ষা বাঁধ। গত ১৫ ডিসেম্বর এই জেলার বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। যে কাজের নির্ধারিত মেয়াদ দেওয়া হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারি। তবে কাজ শুরু হওয়ার ১ মাস পেরিয়ে গেলেও বাঁধ নির্মাণ পুরোদমে শুরু না হওয়ায় চিন্তিত হাওরের কৃষক। কৃষকরা জানান, প্রতিবছর হাওরের বাঁধ নিয়ে কৃষকদের চিন্তিত থাকতে হয়। কোনো বছরই বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময় শেষ হয় না। ফলে আগাম বন্যায় হাওরের ধান পানিতে তলিয়ে যায়।
সুনামগঞ্জ হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, প্রতি বছর হাওরের বাঁধের কাজে অনিয়ম করা হয়, সেইসঙ্গে নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষও হয় না। এবছর নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ না হলে কঠোর আন্দোলন করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মামুন হাওলাদার বলেন, হাওরে পানি বিলম্বে নামায় বাঁধের কাজে সমস্যা হচ্ছে।
তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে। সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্র জানায়, চলতি বছর । গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে সকাল ১১টায় জেলা কাবিটা বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সাথে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ড.মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, বাঁধ নিয়ে কোন অনিয়ম বরধাস্ত করা হবেনা।
তিনি জেলার সব উপজেলার ইউএনওদের বলেন আমি কাজের আপডেট চাই, কোন ধরনের অনিয়ম হলে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। আগামী শনিবার আবারও সাংবাদিক ও কাবিটা কমিটিকে নিয়ে বসব কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে আপনারা জবাবদিহি করবেন, কোন অজুহাত সহ্য করা হবেনা।
আপনারা জানেন বোরো ফসলের সাথে আমাদের খাদ্যে নিরাপত্তা সম্পৃক্ত যদি ফসলহানি হয় তাহলে আমাদের ঘটিবাটি থাকবেনা। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক সমর কুমার পাল এর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন- সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পওর ১) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার, পিপি অ্যাডভোকেট মল্লিক মঈনুদ্দিন সোহেল, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি বিজন সেন রায়, অ্যাড. শেরেনুর আলী, পরিবেশ রক্ষা আন্দোলেনের আবু নসর, সাংবাদিক হিমাদ্রী শেখর ভদ্র, গিয়াস চৌধুরী,, রাজু আহমেদ রমজান, উপজেলার ইউনওবৃন্দ।
এ সময় প্রেজেনেটশনের মাধ্যমে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ ফসলরক্ষা বাঁধের পিআইসি নিয়ে বিভিন্ন উপজেলার সমস্যা ও অসঙ্গতি তুলে ধরেন। এ সময় বক্তারা বলেন, হাওরে অনেকটি বাঁধে কাজ শুরু হয়নি। প্রতিবছর অপরিকল্পিত বাঁধ দেয়া দিয়ে অপচয় করা হয়।
সচ্চতার জন্য প্রতিদিনের আপডেটের জন্য ওয়াটসাপ গ্রুপ করার মতামত ব্যক্ত করেন । এবার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। জেলা প্রশাসনের কর্মকতা জেলার সকল উপজেলার ইউএনও এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা সুনামগঞ্জ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।