নন্দীগ্রামে মমতা ব্যানার্জী জিতেছেন, নাকি শুভেন্দু অধিকারী জিতেছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। এদিকে সংবাদ সংস্থা এএনআই এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরে ১২০০ ভোটে জিতেছেন মমতা। কিন্তু পরে জানা যায় শুভেন্দু জিতেছেন। আনন্দবাজারকে সে কথা জানান বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু নিজেই। এই ঘটনা নিয়ে কমিশনের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা ব্যানার্জী।
এর মধ্যে এবার নন্দীগ্রামের ফল স্থগিতের ঘোষণা দিলো নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনিক কর্মকর্তা আরিজ আফতাব জানিয়েছেন, ফলাফল ঘোষনার ক্ষেত্রে বেশকিছু প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে ভোট পুনর্গণনা হবে কিনা সিদ্ধান্ত নেবেন রিটার্নিং অফিসার। এখন প্রশ্ন উঠেছে এই অবস্থায় মমতা নন্দীগ্রামে হেরে গেলে তার টানা তৃতীয় মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া সম্ভব কিনা?
ভারতের সংবিধানে এ নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে। সংবিধানের আর্টিকেল ১৬৩ ও ১৬৪ অনুযায়ী, কাউকে মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হতে চাইলে বিধানসভার সদস্য হতে হবে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, রাজ্যের বিধানসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতারাই মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করবেন। আরও বলা হয়েছে, টানা ছয় মাস মন্ত্রী কিংবা মুখ্যমন্ত্রী থাকতে গেলে তাকে রাজ্যের কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। অন্যথায় ১৮০ দিন পর তার পদ বাতিল হয়ে যাবে।
সংবিধানের এসব ধারা অনুযায়ী, তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতা ধরে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে যান তাহলে তিনি অন্য কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে ৬ মাস সময় পাবেন। সেক্ষেত্রে দলের কোনো এক সদস্যকে পদত্যাগ করে তার আসনটি শুন্য করে দিতে হবে। আর সেখান থেকেই নির্বাচন করে রাজ্যের ২৯৪ আসনের বিধানসভার আইনপ্রণেতা নির্বাচিত হবেন তিনি। এতে স্পষ্ট যে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে মমতার মূখ্যমন্ত্রী হতে বাধা নেই।
উল্লেখ্য, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভোটে ২৯৪টি বিধানসভার আসন থাকলেও আজ রবিবার ভোট গণনা হিচ্ছে ২৯২টি আসনের। রাজ্যবাসী তো বটেই গোটা ভারত তাকিয়ে রয়েছে নন্দীগ্রামের দিকে। কেননা ওই আসনে রাজ্য রাজনীতির দুই মহারথী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নব্য বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী লড়েছেন। যদিও শুভেন্দু একসময় মমতা ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের মন্ত্রী ছিলেন, পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন।