নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় আত্মীয়কে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা অপহরণ মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। কেন্দুয়া থানার দলপা ইউনিয়নের বুধপাশা গ্রামের মৃত আবু সাঈদের স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা (৩৩)। গত ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ তার মেয়ে নোহাকে অপহরণের অভিযোগে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২৩ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় জাকিয়ার মেয়ে নোহা (১২) ঘুমন্ত মায়ের অজান্তে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। এসময় মদনপুর ইউনিয়নের কাকনিকোনা গ্রামের বাসিন্দা আল মামুন (৩৩) ও তার সহযোগীরা সিএনজিতে করে নোহাকে অপহরণ করে পালিয়ে যায়। জাকিয়া সুলতানা রাস্তায় গিয়ে চিৎকার করলেও আশপাশের মানুষ এসে মেয়েকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। মামলাটি কেন্দুয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) এর বিভিন্ন ধারায় নথিভুক্ত করা হয়।
তবে, অনুসন্ধানে উঠে আসে ভিন্ন তথ্য। স্থানীয় সূত্র ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, নোহা ও আল মামুনের মধ্যে গত পাঁচ-সাত মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পারিবারিক বিরোধের কারণে জাকিয়া সুলতানা তার ফুপা হাবিবুর রহমান কাঞ্চন (৫৫) ও ফুফু ফারহানা বহ্নিকে (৪৫) মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এলাকার মানুষ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বাজারের ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, “হাবিবুর রহমান ও ফারহানা বহ্নি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করছেন এবং ভালো মানুষ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্য নয়।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, “জাকিয়া সুলতানার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি কিছু অসংগতিপূর্ণ আচরণ করে আসছেন। এমনকি তার নৈতিক চরিত্র নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তার কন্যা নোহার অপহরণের ঘটনা নয়। বরং মেয়েটি নিজের ইচ্ছায় আল মামুনের সঙ্গে পালিয়েছে।”
এদিকে মামলার ৬নং সাক্ষী শফিকুর রহমানের সাথে জাকিয়ার সম্পর্ক নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, “মামলাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। আমরা সঠিক প্রমাণের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”