মুসলিম উম্মাহর সার্বজনীন দুইটি উৎসবের মধ্যে অন্যতম কোরবানির ঈদ। ঈদুল আজহার প্রধান আকর্ষণ পশু কোরবানি করা। নিজের অর্থে কেনা পশুটি আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে জবাই করার মাধ্যমে একজন প্রকৃত মুসলমান মূলত নিজেকে আল্লাহর কাছে সমপর্ণের শিক্ষা নেয়।
কোরবানির বিধান আল্লাহর কিতাব, রাসূলের সুন্নাহ ও মুসলমানদের ইজমা দ্বারা সাব্যস্ত। নিচে এর কিছু নমুনা উল্লেখ করা হলো-
* আল্লাহ তাআলা বলেন, “কাজেই আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামায আদায় করুন এবং কুরবানী করুন।” [সূরা কাউছার, আয়াত: ২]
* আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, “বলুন, আমার সালাত, আমার নুসুক (কোরবানি), আমার জীবন ও আমার মরণ সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ্রই জন্য।” [সূরা আনআম, আয়াত: ১৬২]
* আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর আমরা প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য ‘মানসাক’ এর নিয়ম করে দিয়েছি; যাতে তিনি তাদেরকে জীবনোপকরণস্বরূপ যেসব চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছেন, সেসবের ওপর তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। তোমাদেরর ইলাহ্ এক ইলাহ্, কাজেই তারই কাছে আত্মসমর্পণ কর এবং সুসংবাদ দিন বিনীতদেরকে।” [সূরা হাজ্জ, আয়াত: ৩৪]
* সহিহ বুখারী (৫৫৫৮) ও সহিহ মুসলিমে (১৯৬৬) আনাস বিন মালেক (রা.) কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে এসেছে- “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদাকালো রঙের দুইটি মেষ দিয়ে কোরবানি দিয়েছেন। তিনি মেষের পাঁজরের উপর পা রেখে বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার বলে নিজ হাতে জবাই করেছেন।”
* আব্দুল্লাহ বিন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দশবছর মদিনাতে ছিলেন ও কোরবানি দিয়েছেন।” [মুসনাদে আহমাদ (৪৯৩৫), সুনানে তিরমিযি (১৫০৭), আলবানী ‘মিশকাতুল মাসাবীহ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ আখ্যায়িত করেছেন]
* উকবা বিন আমের (রা.) থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সাহাবীদের মাঝে কোরবানির পশু বিতরণ করছিলেন। উকবার ভাগে একটি জিযআ (ছয় মাস বয়সী ভেড়া) পড়ল। উকবা বললেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি একটি জিযআ পেয়েছি। তিনি বললেন: এটি দিয়ে কোরবানি কর।” [সহিহ বুখারী (৫৫৪৭)]
* বারা বিন আযেব (রা.) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “যে ব্যক্তি (ঈদের) নামাযের পর জবাই করল তার নুসুক (ইবাদত) পূর্ণ হয়েছে এবং সে মুসলমানদের আদর্শ অনুসরণ করল।” [সহিহ বুখারী (৫৫৪৫)]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে কোরবানি করেছেন, তার সাহাবীবর্গ কোরবানি করেছেন এবং তিনি সংবাদ দিয়েছেন যে, কোরবানি করা মুসলমানদের আদর্শ। তাই মুসলিম উম্মাহ ইজমা করেছে যে, কোরবানি শরয়ি বিধান।