তাসলিমুল হাসান সিয়াম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি: আকাশে সূর্য যেন বিচ্ছুরিত হচ্ছে। সেই তাপে পুড়ছে জনজীবন। সড়কের পিচও গরমে চিকচিক করছে। সড়কের তাপ ও সূর্যের তাপ মিলে নাকাল গাইবান্ধার মানুষ।
বৈশাখ মাসের তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষসহ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের জনজীবন। গত কয়েকদিন ধরে সূর্যের প্রখর তাপদাহে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে প্রাণিকুল । সোমবার ১৭ এপ্রিল গাইবান্ধায় তাপমাত্রা পরিমাপ স্কেলের পারদ এদিন অতিক্রম করে ৪১ ডিগ্রী সেলসিয়াসে।যা অতীতের গত বেশ কয়েক বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে
। সরেজমিনে গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে চোখে পড়ে প্রচন্ড তাপদাহে অতিষ্ট হয়ে এক দল শিশু গরম থেকে বাঁচতে সেচ পাম্পের পানিতে গোসল করছে ।
এদিকে জেলা জুড়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রচন্ড তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মানুষে জনজীবন অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একদিকে রোধের প্রখর তাপ অন্যদিকে বিদ্যুতের ঘন ঘন তেলেশমাতি মানুষের জনজীবনে দুর্ভোগের নতুন মাত্রা সৃষ্টি হয়েছে। প্রচন্ড রোদের গরমে সাধারণ হতদরিদ্র মানুষরা জীবিকা নির্বাহের জন্য রাস্তায় বের হতে পারেনা। দুপুর হলে রাস্তাঘাটে লোকজনের সংখ্যা একেবারে কমে যায়। প্রচন্ড গরমের কারণে জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে রোগীদের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তীব্র গরমের কারণে দিনমজুর শ্রমিকরাও সহজে কাজে যেতে চায়না। শহরের গাইবান্ধা সরকারি কলেজ চত্বরে গাছের ছায়ায় রিকশার হুড তুলে বিশ্রাম নেওয়া চালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘রোদ তো না, যেন আগুনের হল্কা বের হচ্ছে। বাইরে দুই চার মিনিট থাকা যাচ্ছে না। খুব তেষ্টা পাচ্ছে। শরীর জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে।’
পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর এলাকার দিনমজুর শামছুদ্দিন, ফজলু মিয়া, গোলাম হোসেন বলেন, রোজা রেখে এই তীব্র গরমে মাঠে কাজ করতে ইচ্ছে হচ্ছেনা। মনে হচ্ছে শরীরে আগুন লেগেছে। তাই গাছের ছায়ায় একটু শুয়ে পড়েছি।
এদিকে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে ।প্রখর সূর্যের তাপে পাট শাকসহ বিভিন্ন শাক সবজি পানির অভাবে নেতিয়ে পড়েছে ।
গাইবান্ধা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা: সোহেল মাহমুদ বলেন,
‘এই গরমে সব বয়সী মানুষের ডায়রিয়াসহ পেটের নানা ধরনের পীড়া দেখা দিতে পারে। বয়স্ক যারা তাদের হিট স্ট্রোক হতে পারে। এ সময় যতদূর সম্ভব রোদে না বের হওয়া ভালো। শ্রমজীবী মানুষকে তো আটকে রাখা যাবে না। তাদের জন্যে পরামর্শ, সকাল সাড়ে দশটা ও বিকেলের দিকে যেন তারা কাজ করেন।’
বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার বিশেষ করে ডাব, ইফতারে ভাজা পোড়া খাবার পরিহারের পরামর্শ দেন তিনি।