পুলিশ ও বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের সদস্যদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার কেবল ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই পাঁচজন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় সংঘবদ্ধ হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে থানার প্রধান ফটক ও পুলিশের দুটি মোটরসাইকেল। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও স্থাপনার সামনে অবস্থান নেন পুলিশ, র্যাব, বিজিবির সদস্যরা। নিয়েছেন সর্বোচ্চ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। অন্যদিকে শুক্রবার নিহতদের ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসা ও আটকদের মুক্তি দাবিতে রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছে হেফাজতে ইসলাম।
রাজধানীতে বাসে আগুন : হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ কর্মসূচির মধ্যে রাজধানীর সায়েদাবাদের জনপদ মোড়ে শনিবার রাত ৮টায় দুর্বৃত্তরা একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে। এর আগে দুপুরে মালিবাগ রেলগেটে পুলিশবক্সের সামনে তুরাগ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়া হয়। তবে বাসটিতে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ সদস্যরা দ্রুত পানি দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন লাগার পর আতঙ্কিত যাত্রীরা বাসের জানালার কাচ ভেঙে নেমে যান। দিগ্বিদিক ছোটাছুটি আর লাফিয়ে নামতে গিয়ে কয়েকজন আঘাত পেয়েছেন। তবে কেউ গুরুতর আহত হননি।
এ বিষয়ে হাতিরঝিল থানার এসআই অনাথ মিত্র জানান, উত্তরাগামী তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। স্থানীয়দের নিয়ে পুলিশ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুন লাগার কারণ বাসের চালক, হেলপার, যাত্রীদের কেউই বলতে পারেননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। জেলার বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। পুলিশসহ আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। বিকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নন্দনপুরে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী অবস্থান নেন। পুলিশ-বিজিবি তাদের ধাওয়া করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। ফলে উভয় পক্ষে ব্যাপক সংঘর্ষ ঘটে। বেশ কয়েকজন আহত হন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রানা নুরুস শামস সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা পাঁচজনকে মৃত ঘোষণা করেছি। তবে দুজনের নাম জানা যায়নি।
নিহতরা হলেন নন্দনপুর হারিয়া গ্রামের আবদুল লতিফ মিয়ার ছেলে ওয়ার্কশপের দোকানি জুরু আলম (৩৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার দাবির মিয়ার ছেলে শ্রমিক বাদল মিয়া (২৪) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বারিউড়া মৈন্দ গ্রামের জুরু আলীর ছেলে সুজন মিয়া (২২)। আহতদের সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদিকে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের এক সূত্র জানান, গতকাল বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিস্থিতির অবনতি হলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন যে কারণে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশনে নোয়াখালীগামী আন্তনগর উপকূল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা স্টেশনে ঢাকাগামী মহানগর গোধূলি, আখাউড়া রেলস্টেশনে মহানগর এক্সপ্রেস আখাউড়া স্টেশনে আটকা পড়ে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে সূত্র জানিয়েছেন। জানা গেছে, বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের টি এ রোড দিয়ে আওয়ামী লীগের একটি র্যালি জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসা এলাকা অতিক্রমের সময় পেছন থেকে মাদরাসার কয়েক ছাত্রকে ধাওয়া করে। ছাত্ররাও পাল্টা ধাওয়া দেয়। তখন অর্ধশত ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। কিছুক্ষণ পর কান্দিপাড়া মসজিদের মাইক থেকে মাদরাসা রক্ষার জন্য ঘোষণা দেওয়া হলে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে পড়ে। তখন ছাত্রলীগ কর্মীরা পিছু হটেন। ক্ষুব্ধ লোকজন প্রধান সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। শহরের দোকানপাটও বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিজিবি পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাদরাসা এলাকায় থেমে থেমে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছিল। অন্যদিকে শুক্রবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ভাঙচুর ও তান্ডবের ঘটনায় গতকাল বিকাল পর্যন্ত তিনটি মামলা হয়েছে। আরও মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও স্থাপনার সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বিজিবি টহল দিচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন পয়েন্টে ৬০০ পুলিশ ও সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। রয়েছে র্যাবের টহল। হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এদিকে সরাইলে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুল ইসলাম ঠাকুরসহ আড়াই শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। প্রধান আসামি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য দুলাল মাহমুদ আলী। এসআই হোসনে মোবারক বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
চট্টগ্রাম থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, হাটহাজারীতে পুলিশ ও হেফাজত নেতা-কর্মীদের সংঘাতের পর চট্টগ্রামজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শনিবার চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম ও ইসলামী কয়েকটি রাজনৈতিক দল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শনিবার সারা দিনই হাটহাজারী থানায় দফায় দফায় বৈঠকে বসেন প্রশাসন ও হেফাজতে ইসলামের নেতারা। তবে পাঁচ দফা দাবির বিষয়ে এখনো অনড় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। থানা ভবন ও আশপাশ এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্য। হাটহাজারী থানার সামনে রাখা হয়েছে বিজিবির সাজোয়াঁ যান। তবে হেফাজতের কর্মীরা হাটহাজারী মাদরাসার সামনে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে ইট-সিমেন্টের দেয়াল তুলে দিয়েছেন। হাটহাজারীর ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, গত রাত সাড়ে ৮টায় হাটহাজারী ডাকাবাংলোয় হেফাজত কর্মীরা অগ্নিসংযোগ করেছেন। তারা রাস্তা অবরোধ করে রাখায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। তবে স্থানীয়দের সহায়তার আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে।
হাটহাজারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘প্রশাসন ও হেফাজত নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অবরোধ প্রত্যাহারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন হেফাজত নেতারা। বৈঠকে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, ‘হাটহাজারীর পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। ফের সংঘাত এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। ওই ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
জিম্মিদশা থেকে মুক্ত পুলিশ সদস্য : হাটহাজারীতে সংঘর্ষ চলাকালে মাদরাসা ছাত্রদের হাতে জিম্মি হওয়া চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার কনস্টেবল মো. সোলেমান মুক্ত হয়েছেন। শনিবার বিকালে হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন নেতা পুলিশ সদস্যকে নিয়ে হাটহাজারী থানায় আসেন। এদিকে সিলেটে শনিবার দিনভর বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ইসলামিক সংগঠন। দেশব্যাপী নাশকতার প্রতিবাদে পাল্টা মিছিল করেছে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। মোদিবিরোধী বিক্ষোভ থেকে শিবিরের ১৪ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। নগরীর নয়াসড়ক এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিবির। মিছিলে বাধা দিলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন শিবির নেতা-কর্মীরা। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করলে নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। ওই সময় পুলিশ শিবিরের ১৪ নেতা-কর্মীকে আটক করে এবং তাদের ফেলে যাওয়া ১৫টি মোটরসাইকেল জব্দ করে। গতকাল বেলা ২টার দিকে কোর্ট পয়েন্ট থেকে মিছিল বের করে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন। মিছিলটি জিন্দাবাজারে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলে কয়েক শ নেতা-কর্মী অংশ নেন। অন্যদিকে, দেশব্যাপী বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে গতকাল পৃথক মিছিল ও সমাবেশ করেছে যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ। বিকাল ৪টায় সিলেট জেলা পরিষদের সামনে থেকে মিছিল বের করে জেলা যুবলীগ। একই সময় চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে মিছিল বের করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। যুবলীগের মিছিলটি শহীদ মিনার ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের মিছিলটি রিকাবিবাজারে গিয়ে শেষ হয়।
অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শনিবার ভোর থেকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, শনিবার ভাঙ্গা থানায় সংঘবদ্ধ হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করা হয়েছে থানার ফটক। এ সময় পুলিশের দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। আহতরা হলেন- এসআই মো. শহীদুল্লাহ (৪৭), আবুল কালাম আজাদ (৩৫), এএসআই আজিজুল রহমান (৩৩), কনস্টেবল জয়নাল আবেদিন (৩৫), শাহ জালাল (২৭) ও মতিউর রহমান (৪৩)। তাদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৪৫টি শটগানের গুলি ছুড়ে। গতকাল দুপুর থেকেই ফরিদপুরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটিতে কেন্দ্রীয় রেলওয়ে জামে মসজিদের সামনে সমাবেশে হেফাজত নেতারা এসব কথা বলেন। সেখানে বিপুল সংখ্যক র্যাব, পুলিশ ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মিছিল হওয়ার ঘোষণা থাকলেও শুধু সমাবেশ হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভ করেছে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আধা ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। শনিবার দুপুর ২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে নেত্রকোনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা হেফাজত নেতা-কর্মীরা। শনিবার দুপুরে পৌর শহরের বারহাট্টা রোডস্থ মিফতাহুল উলুম মাদরাসার সামনে থেকে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এরপর কিছুক্ষণের মাঝেই আবারও পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মিছিলটি শহরের বড়বাজার মোড়ে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় সড়ক অবরোধ করে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, মোদিবিরোধী বিক্ষোভে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেতা-কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে কুমিল্লায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সমাবেশে শুক্রবার হতাহতের ঘটনায় রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সফলভাবে পালনের ঘোষণা দেন হেফাজতে ইসলামের কুমিল্লার নেতৃবৃন্দ। শনিবার কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় টাউন হল মাঠে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাজগঞ্জ, মোগলটুলি ও ঈদগাঁও হয়ে পূবালী চত্বরে এসে এই প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
হবিগঞ্জে সংঘর্ষ অর্ধশত আহত : হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, শহরের শায়েস্তানগরে পুলিশ ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ ৮ জনকে আটক করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৩২ রাউন্ড বুলেট ও ২১ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। বিএনপি নেতা-কর্মীরা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুরে শায়েস্তানগর এলাকার বিএনপি কার্যালয়ে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা কর্মসূচি পালন করছিলেন। এক পর্যায়ে জেলা কার্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে শায়েস্তানগর পয়েন্টে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে পুলিশ ও নেতা-কর্মীদের মাঝে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে পুলিশসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয় বেশ কয়েকজন। এদিকে পুলিশ জানায়, কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই বিএনপি নেতা-কর্মীরা প্রধান সড়কে যান চলাচল ব্যাহত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিল। এ সময় বাধা দিলে তারা কারণ ছাড়াই পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় তাদের আঘাতে পুলিশের অন্তত ৮ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুক আলী জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন