স্টাফ রিপোর্টার সুনামগঞ্জ আদালতে যৌতুক ও নির্যাতনসহ পারিবারিক নানা ঝামেলা নিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করেছিলেন ৪৫ নারী। দীর্ঘদিন পর এসব মামলার রায় দিয়েছে আদালত। তবে কাউকে সাজা দেওয়া হয়নি। ৪৫ দম্পতিকে সংসারের বন্ধনে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন পৃথক এই ৪৫ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর তাদের হাতে ফুল তুলে দেওয়া হয়েছে। আদালতের এজলাসে মামলার বাদী-বিবাদীদের রায় পড়ে শোনান বিচারক। এ সময় স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে সদ্ভাব বজায়, যৌতুক দাবি না করা ও অত্যাচার নির্যাতন না করাসহ পৃথক পাঁচটি শর্তে আসামিদের আপসে মুক্তি দেন। আদালতের আদেশ মেনে না চললে আবারও মামলা চালু হবে বলে সর্তক করেন। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ৪৫টি পরিবারকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য এরকম আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্ন দম্পতিরা সন্তানাদি ও পরিবার-পরিজন নিয়ে আগের মতো সংসার করতে পারবেন। বাবা ও মায়ের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমার কারণে এসব পরিবারের শিশুরা পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। দীর্ঘদিন ধরে মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে উভয় পরিবারের আর্থিক ও মানসিক ক্ষতি হয়েছে। এসবের প্রভাব এসেছে পড়েছে তাদের সন্তাানদের ওপর। ফলে শিশু সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এদিকে আদালতের এমন মহানুভবতা ও ব্যাতিক্রমী রায়ে সন্তুষ্টু প্রকাশ করেছেন দম্পত্তিরা। অনিশ্চিত ভবিষৎ থেকে বেরিয়ে পরিবার ও সন্তাননাদী নিয়ে নতুনভাবে বাঁচার সুযোগ করে দেয়ায় আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা। দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের সেলিমা বেগম বলেন, পারিবারিক বিরোধ, অশান্তি, নির্যাতনে আমার জীব বিভিষিকায় রূপ নিয়েছিল। স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগে আদালতে মামলা করি। আদালত তাকে জেলে পাঠায়। আদালতের হস্তক্ষেপে আজ আপোষে মিমাংসা হলো। আমি আনন্দিত । দোয়া করবেন আমরা যেন ভালো থাকতে পারি। জগন্নাথপুর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের সেপি বেগম ও স্বামী আশিকুর রহমান বলেন, পরিবার সন্তান নিয়ে এতোদিন অনিশ্চিয়তায় ছিলাম। আদালত আমাদের সুযোগ করে দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশনা মেনে সামনে সুখে শান্তিতে চাই। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের পিপি অ্যাডভোকেট নান্টু রায় বলেন, আদালতের কাজ শুধু সাজা দেওয়া নয়, শান্তি দেওয়াও। যুগান্তকারী এই রায়ের ফলে ৪৫টি পরিবার রক্ষা পেয়েছে। দীর্ঘদিন মামলা চালিয়ে পরিবারগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। আজ মামলা শেষ হওয়ায় তারা আবার সংসার জীবনে ফিরে যাবে।
আপনি যা যা মিস করেছেন
Add A Comment