সিলেট শহর ও আশপাশে একের পর এক ভূমিকম্প ও আফটারশকে আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। কখনো ভারতের মেঘালয়ের ডাউকি ফল্ট, কখনো সিলেট অঞ্চলের ভেতরের ফল্ট থেকে কম্পন অনুভূত হওয়ায় মানুষ চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকা কয়েকটি স্থানীয় ফল্ট সক্রিয় হয়ে ওঠায় বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে। এ অবস্থায় সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম জানিয়েছেন, নগরীর ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকেই এসব ভবন অপসারণের কাজ শুরু হবে।
প্রশাসনের আশঙ্কা, ভবনগুলোতে এখনো লোকজন বসবাস বা কাজ করছেন-দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, নগরীর অনেক পুরোনো ভবনেই ভূমিকম্প প্রতিরোধী কোনো কাঠামোগত ব্যবস্থা নেই, ফলে সামান্য কম্পনেও এগুলো ধসে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। ঝুঁকিতে থাকা ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট ও আবাসিক ভবন। শুক্রবার সিলেটে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে দুই শিশুসহ ১০ জন নিহত এবং কয়েকশ মানুষ আহত হয়।
পরদিন শনিবারও তিন দফা কম্পন অনুভূত হয়-সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে ৩.৩, সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৩.৭ এবং এরপর ৪.৩ মাত্রার। ২০১৯ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন নগরীর ২৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা করেছিল। এর মধ্যে ৬টি ভবন সংস্কারের মাধ্যমে নিরাপদ করা হলেও ১৮টি এখনো বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে।
এ তালিকায় সমবায় ব্যাংক ভবন মার্কেট, মধুবন মার্কেট, সুরমা মার্কেট, মিতালী ম্যানশন, রাজা ম্যানশন, নবপুষ্প-২৬/এ, আজমীর হোটেলসহ বেশ কিছু বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন রয়েছে। জেলা প্রশাসক জানান, নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে এসব ভবন ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংকীর্ণ রাস্তা ও ফায়ার সার্ভিসের যানবাহন প্রবেশের সমস্যার কারণে উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত হতে পারে-এ বিষয়েও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
