তাসলিমুল হাসান সিয়াম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক তার কর্মচারী আতিকুর রহমানকে অপহরণ, নির্যাতন ও অস্ত্রের মুখে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) গাইবান্ধা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগকারী তার কর্মচারী আতিকুর রহমানের নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন তিনি।বিদিশা বলেন, আতিকুর রহমান আমার পিএস-এপিএস এ রকম কিছুই ছিলেন না। তিনি আমার গাড়িচালকের ভাগ্নের পরিচয়ে আমার ঢাকার রেস্টুরেন্টে কাজ নেন। সেখানে থালাবাটি পরিষ্কার করতেন। মূলত, তিনি আমার রেস্টুরেন্টের কর্মচারী ছিলেন। একপর্যায়ে তাকে রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারের দায়িত্ব দিই। পরে তাকে ড্রাইভিং শিখিয়ে গাড়ি চালানোরও দায়িত্ব দিই। তিনি দীর্ঘদিন আমার গাড়ি চালিয়েছেন।তিনি বলেন, একসময় আতিকুর আমাকে প্রস্তাব দেয়, গাইবান্ধা এলাকায় একটি ইটভাটা নির্মাণ করার জন্য। তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে আমি তাকে ৬ কোটি টাকা দিই। এ টাকার মধ্যে আমার এফডিআর, ঋণ ও অন্যোর কাছে ধার নেওয়া টাকা রয়েছে। এ টাকায় আমার মালিকানা ভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হয়। এটাই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে আরেকটি বড় ভুল। তাকে আমি ওমরা হজ করতে নিয়ে যাই। তিনি কাবা শরিফ ছুঁয়ে আমাকে কথা দেন, ম্যাডাম, আপনার সাথে জীবনে বেইমানি করব না। আপনার টাকা তছরুপ করব না। আতিকুরের সাথে আমার লিখিত চুক্তি ছিল প্রতিমাসে আমাকে লভ্যাংশের টাকা দেবে। এরপর ইটভাটা চালু হলে আতিকুর আমাকে প্রথম এক বছর লভ্যাংশের কিছু টাকা দিয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি আমাকে লভ্যাংশের ৩ কোটি ১৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা দেন। হিসেব করে দেখা যায়, আমি তার কাছে আরও আসল ও লভ্যাংশ মিলে ১০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা পাওনা আছি।
বিদিশা বলেন, এরপর তিনি আস্তে আস্তে আমার সাথে দূরত্ব তৈরি করেন। মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তার পরিবারও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি। তিনি তালবাহানা করতে থাকেন। তখন আমি দুশ্চিন্তায় পড়ি। তখন আমি বাধ্য হয়ে গাইবান্ধায় আসি, আমি ভাটায় যাই। সেখানে তাকে ডেকে নিই বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য। তখন আতিকুর আমাকে বলে ঢাকায় চুক্তিপত্র হয়েছে, ভাটায় আলাপ না করে ঢাকায় আপনার বাসায় যাই। তাই তিনি আমার সাথে ঢাকায় আসেন। পরে টাকা লেনদেনের বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য তিনি তার ভাই-বাবাকে ঢাকায় ডেকে নেন।অথচ, আতিকুর রহমান তাকে অপহরণ, ১০ দিন ঢাকার বাসায় আটকে রেখে নির্যাতন ও অস্ত্রের মুখে স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ তুলে নাটক সাজিয়ে আদালতে অভিযোগ দায়ের ও সংবাদ সম্মেলন করে। মূলত, টাকা না দেওয়ার জন্য তিনি মিথ্যা নাটক সাজাচ্ছেন