স্টাফ রিপোর্টার,
বগুড়া বগুড়ায় অবৈধভাবে পেশী শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে অন্যের দোকান দখল করার অভিযোগ উঠেছে বগুড়া মন্ডল মার্কেটের মালিক মোঃ ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে। মার্কেটের মালিক সমিতি এবং দোকানদারদের সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে একদল বহিরাগত সন্ত্রাসীদের উপস্থিতিতে রফিক খান নিউ মার্কেটের কোটি টাকা মূল্যের একটি দোকান অবৈধভাবে তালাবদ্ধ করেন ইকবাল এবং তার সহযোগীরা।শুধু তাই নয়, দোকানের গেটে সে তার ভাড়া করা সহযোগীদের মাধ্যমে ওয়েল্ডিংও করে দিয়েছে। এতে দোকানের পজিশন হোল্ডার আব্দুল্লাহিল কাফি এবং আব্দুল্লাহিল শাফি বিপাকে পড়ে গেছেন।
দোকানটির পজিশন হোল্ডার আব্দুল্লাহিল কাফি এবং আব্দুল্লাহিল শাফি আমাদের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন যে, মার্কেট প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে তার প্রয়াত বাবা এবং পরবর্তীতে তারা দুই ভাই পজিশন হোল্ডার হিসেবে দোকানটি পরিচালনা করছেন। মূলত দোকানটি তাদের জীবিকা নির্বাহের প্রধান মাধ্যম। কিন্তু গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে পর্যাপ্ত পুঁজি না থাকায়, তারা দুই ভাই তাদের পজিশনকৃত দোকানটি অন্যকে সাব-ভাঁড়া দেন।
তার কিছু দিন পরেই মোঃ ইকবাল হোসেন নামের ব্যক্তি বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জোড়পূর্বক দোকানটি তালাবদ্ধ এবং দোকানটির দরজা ওয়েল্ডিং করে দেন। ইকবাল শুধু এটি করেই সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং সে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে রাস্তায় ও বাসায় অবিরত প্রাণনাশের হুমকি দিয়েই যাচ্ছে, যাতে করে তারা রাস্তায় বের হতে ভয় পাচ্ছে। তাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য তারা রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট অথোরিটির নিকট বিশেষভাবে দাবি জানিয়েছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বগুড়া মন্ডল মার্কেট এবং রফিক খান মার্কেটের বেশ কিছু দোকানদার জানিয়েছেন, ইকবাল লোকটি একজন ধূর্ত প্রকৃতির এবং বাটপার।
তিনি এর আগেও তার বাবার সম্পদ জালজালিয়াতি করে ভোগ দখল করেছিলেন।পরবর্তীতে তিনি মন্ডল মার্কেটের বেশকিছু দোকানদারদের সাথেও জালিয়াতি করে অথবা ইচ্ছেকৃতভাবে বিপদে ফেলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছেন। মূলত এটা তার পুরোনো স্বভাব। নিম্ন আয়ের পজিশন হোল্ডাররা তাদের শেষ সম্বল হারানোর ভয়ে প্রকাশ্যে ইকবালের বিরুদ্ধে মুখ খুঁলতে ভয় পান।শুধু তাই নয়, ইকবাল লোকটি সবসময় ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে থাকে, সে ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে নিজেকে পাল্টিয়ে সবসময় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে বলে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রফিক খান নিউ মার্কেট এবং মন্ডল নিউ মার্কেটের বেশ কয়েকজন দোকানদার আমাদের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।
রফিক খান নিউ মার্কেটের সভাপতি মোঃ আব্দুল খালেক তার সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, ইকবাল অবৈধভাবে অন্যের পজিশনকৃত দোকান দখল করেছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়ার পর, আমরা মার্কেটের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা মার্কেটের ব্যবসায়িক পরিবেশ বজায় রাখতে তার সাথে বারবার আলোচনার জন্য তাঁগিদ দেই কিন্তু সে বারবার নানান তালবাঁহানা করতে থাকে এবং বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশের স্মরণাপন্ন হন। পরবর্তীতে দুই দফা গত ৩০ এপ্রিল-২০২৫ বুধবার এবং ৩ মে-২০২৫ শনিবার পুলিশি বৈঠকে বিষয়টি সমাধান না হওয়ায়, পরবর্তীতে ৪ মে-২০২৫, রবিবার ইকবাল হোসেন বগুড়া প্রেস ক্লাবে ভূয়া ও বানোয়াট প্রেস ব্রিফিং করে বলে স্থানীয় দোকান মালিক সূত্রে জানা যায়।
এদিকে বগুড়া প্রেস ক্লাবে ইকবাল হোসেনের প্রেস ব্রিফিংয়ের উক্ত ব্রিফিংটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে Rahim Newsbogra (Journalist) আইডি থেকে পোস্ট করার পর উক্ত পোস্টে ইকবালের ভাগ্নি মারজান খান, তার মামার প্রেস ব্রিফিংকে ভন্ডামি এবং সীমা অতিক্রম করছেন বলে কঠোর সমালোচনা করেন, পাশাপাশি ইকবাল তার জন্মদাতা বাবার সম্পদও জালজালিয়াতি করে লিখে নিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন।ইকবালের এমন ঘটনায় তারা লজ্জিত বলে মনে করেন ইকবালের ভাগ্নি মারজান খান। সরজমিনে দেখা যায়, বিষয়টি নিয়ে রফিক খান নিউ মার্কেট এবং মন্ডল নিউ মার্কেটে চরম উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। ৫মে ২০২৫ ইং, সোমবার সকাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, ইকবাল যদি অবৈধভাবে দখল করা দোকানটি, দোকানের বৈধ পজিশন হোল্ডার আব্দুল্লাহিল কাফি এবং আব্দুল্লাহিল শাফির নিকট হস্তান্তর না করেন, তবে মার্কেট মালিক সমিতি এবং সকল শ্রমিকরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
তারা কোনো ভাবেই মার্কেটের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে ব্যবসা করা একটি পরিবারকে পথে বসতে দিবে না, এটা চরম অন্যায় এবং পজিশন হোল্ডারদের সাথে স্বেচ্ছাচারী ও পেশীশক্তির প্রদর্শন করে তাদেরকে পথে বসানোর পাঁয়তারা বলে অভিযোগ পাওয়া যায় স্হানীয় সূত্রে। বগুড়া প্রেস প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল হোসেন তালাবদ্ধ দোকানটি তার দোকান দাবি করলেও, মার্কেটের সকল দোকানদার, মালিক সমিতি এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায় দীর্ঘ কয়েক দশক সময় যাবত পজিশনকৃত দোকানটি আব্দুল্লাহিল কাফি, আব্দুল্লাহিল শাফি এবং তাদের প্রয়াত বাবা পরিচালনা করছেন।সুতরাং অভিযুক্ত ইকবালের দাবির পিছনে শক্ত কোনো যুক্তি সরজমিনে দেখা যায় নি।