স্টাফ রিপোর্টার : নেত্রকোণার কলমাকান্দায় ১৪ বছর বয়সী মাদরাসা ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ আরও দুজনকে অজ্ঞাতনাম আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে থানা পুলিশকে নথিভুক্ত করার নির্দেশনা দেন।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন মামলাv তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. জালাল উদ্দীন। এর আগে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাতনামা দুজনকে আসামি করে গত ২৩ নভেম্বর জেলার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেন। গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৬টায় ভুক্তভোগী ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয় বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের নাজিম উদ্দীনের ছেলে মনির মিয়া (২৪)। অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- একই এলাকার মো. সালাম মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২৩) ও হোসেন আলীর ছেলে দৌলত মিয়া (২২)। আদালতে অভিযোগের পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন।
মামলায় উল্লেখ, অভিযুক্তরা প্রায় সময় মাদরাসায় আসা যাওয়ার পথে ভুক্তভোগীকে উত্যক্ত করত ও অশালিন কথাবার্তা বলতো। ঘটনার দিন গত ১১ নভেম্বর ভুক্তভোগী তার মাকে বিষয়টি জানায়। পরে ওইদিন বিকেলে ভুক্তভোগীর মা সংরক্ষিত মহিলা আসনের ইউপি সদস্যকে জানায়। পরে অভিযুক্ত মনির মিয়াসহ তাদের অভিভাবকদের জানাতে গেলে ইউপি সদস্যসহ ভুক্তভোগীর মায়ের ওপর চড়াও হন মনিরসহ তার লোকজন। এতে করে গুরুতর আহত হন তারা দুজন।
এ খবর পেয়ে ভুক্তভোগীসহ তার প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। আহত দুজনকে মুনিরের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নেন। ভুক্তভোগী তার মায়ের কাপড় চোপড় আনতে নিজ বসত বাড়িতে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীর মুখ চেপে ধরে বাড়ীর পাশে ধান ক্ষেতে নিয়ে যায়। পরে ভুক্তভোগীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে দ্রুত পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মনির মিয়ার বাবা নাজিম উদ্দীন বলেন, ঘটনার দিন ওই সময়ে আমার ছেলেসহ অন্যরা এলাকায় ছিল না। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমাদের বসত বাড়ীতে মনিরের মা মিনারা খাতুনকে একা পেয়ে মেয়েটির মা, মেম্বারনিসহ তার দুই ছেলে খোকন ও রায়হান মারপিট করে। এতে গুরুতর আহত হয় মিনারা খাতুন। এ ঘটনা দেখে পার্শ্ববর্তী বাড়ীতে থাকা তার বোন বেদেনা খাতুন মারপিট থামাতে গেলে তাকেও আঘাত করে বাড়ীর উঠানে ফেলে রেখে চলে যায় তারা। আর এখন মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমার ছেলেকেসহ তিনজনের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নাজিম উদ্দীন বলেন, অন্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে এ দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন। যাহা মিথ্যা মামলা।
কলমাকান্দা থানার ওসি (পরিদর্শক) মো. জালাল উদ্দীন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মাদরাসার ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলছে। এ মামলায় আসামিদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।