বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪

নাগরপুরে শীত মৌসুমে কদর বেড়েছে ভাঁপা ও চিতই পিঠার “বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়”

যা যা মিস করেছেন

ডা.এম.এ.মান্নান
নাগরপুর(টাঙ্গাইল)সংবাদদাতাঃ
সারা দেশের ন্যায়,সকালের কুয়াশা কিংবা সন্ধ্যার হিমেল বাতাসের মাঝে নাগরপুরে কদর বেড়েছে শীতের ভাঁপা ও চিতই পিঠার।

গরম আর সুগন্ধি ধোঁয়ায় মন আনচান করে ওঠে সবার। উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে পাড়া মহল্লায় এখন ভাঁপা ও চিতই পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে। শীত এলেই এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা সকাল-বিকেল, এমনকি গভীর রাত পর্যন্ত এ ব্যবসায় ব্যস্ত সময় কাটান। এই পিঠার স্বাদে ক্রেতারা মুগ্ধ। শীতের সময় এখানকার নিম্ন আয়ের অনেক মানুষের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ভাঁপা ও চিতই পিঠার ব্যবসা। একদিকে ভাপা ও চিতই পিঠার স্বাদ আর অন্যদিকে চুলার আগুন আর জলীয় বাষ্পের উত্তাপ যেন চাঙ্গা করে দেয় দেহমন। এ যেন শীতের আরেক আমেজ।

রবিবার(১০ ডিসেম্বর)সকালে উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত নাগরপুর সরকারি কলেজ গেট, সদর বাজার, গয়হাটা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় স্বল্প আয়ের লোকজন গড়ে তুলেছেন অস্থায়ী পিঠার দোকান। মূলত সেখানে ভাঁপা ও চিতই পিঠা তৈরি হচ্ছে। রিকশাচালক, দিনমজুর, শিশু-কিশোর, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এ পিঠার দোকানের ক্রেতা। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অনেককে আবার পিঠা খেতে দেখা যায়। অনেকে আবার পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দের পিঠা নিয়ে যাচ্ছেন।

কথা হয় উপজেলার ডাংগা ধলাপাড়ার বাসিন্দা মো. টিটু মিয়া(৩৬) তিনি জানান- ২৭ বছর যাবত এই পিঠা ব্যবসার সাথে জড়িত। তার পূর্ব পুরুষ গণ এই ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি শীত কাল আসলেই পিঠা ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকেন। তিনি আরও জানান, গড়ে প্রতিদিন ১৮ কেজি করে চাউল গুড়া লাগে। ভাঁপা পিঠা পিচ প্রতি ২০ টাকা এবং চিতই পিঠা পিচ প্রতি ১০ টাকা দরে বিক্রি করে। খরচ বাদে গড়ে তিনি ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা আয় করেন।

মোকনা বাজারের পিঠা বিক্রেতা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) তিনি বলেন- প্রতিদিন ৮ কেজি চালের গুঁড়ার পিঠা বিক্রি করতে পারেন। তার দোকানে ভাঁপা ও চিতই দু’ধরনের পিঠাই বিক্রি হয়। তবে ভাঁপা পিঠার চাহিদা একটু বেশি। তিনি প্রতিটি পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি করেন।

ক্রেতা কলেজ ছাত্র মো.জাহিদ হাসান ও
জুবায়ের হোসেন সাংবাদিকদের বলেন- আগে আমরা হোটেল থেকে পুরি, সিঙ্গারা ও পিঁয়াজু কিনে খেতাম। আর এখন শীতের সময় ভাঁপা পিঠা ও চিতই পিঠার সাথে সরিষার ভর্তা, শুটকি ভর্তা, ধনে পাতা ভর্তা অনেক স্বাদের কারণেই প্রতিদিন এখানে আসি পিঠা খেতে।

স্কুল শিক্ষিকা মোছা.তাসলিমা আক্তার মুন্নী বলেন-সারাদিন পরিশ্রমের পর বাড়িতে আর পিঠা বানাতে ইচ্ছে করেনা। মাঝে মধ্যে পরিবারের জন্য ফুটপাত থেকে পিঠা কিনে বাড়িতে নিয়ে যাই।

ভাঁপা ও চিতই পিঠার বিষয়ে নাগরপুর মহিলা কলেজ এর অধ্যক্ষ মো.আনিসুর রহমান বলেন-পিঠা আমাদের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য। বর্তমান সময়ে এই ঐতিহ্যগুলো ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রাস্তার পাশের দোকানগুলোয় মূলত ভাঁপা পিঠা, চিতই পিঠা ও তেলের পিঠাসহ নানান জাতের পিঠা বিক্রি করা হয়। শীত কালে বাসায় মেহমান আসলে আনন্দ উল্লাস করে বাসায় বিভিন্ন আইটের পিঠা তৈরী করে মজা করে সবাই মিলে খাইতাম, আর এখন বাজার থেকে কিনে এনে নিজেও খাই আত্বীয় স্বজনদেরও বিদায় করি। এই গ্রাম বাংলার পিঠার ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমাদের সকল পরিবারে পিঠা তৈরী করার নীতি চালু রাখতে হবে।

টাংগাইল হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এ-র সহযোগী অধ্যাপক ডা.মো.তোফাজ্জল হোসেন জানান-রাস্তার পাশে,খোলা পরিবেশের যেকোন খাবার খেলে ফুড পয়জনিং, ডায়রিয়া, টাইফয়েড সহ নানা ধরণের পেটের পীড়া হতে পারে। এজন্য খোলা পরিবেশের খাবার পরিহার করা উচিত। তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি করা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পান করতে কোন সমস্যা নেই।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security