মো: আরিফুল ইসলাম, নওগাঁ প্রতিনিধি:
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়ে দেবার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নওগাঁয় গণ-অনশন কর্মসূচি পালন করছেন দলের নেতাকর্মীরা।
শনিবার (১৪ অক্টোবর)বেলা ১১টার দিকে শহরের কেডির মোড় এলাকায় জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় বিএনপির নেতারা রাজপথের কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেন।
শহরের কেডির মোড়ে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তায় কাপড় ও মাদুর পেতে বসে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। অনেক নেতা-কর্মীরা বসার জায়গা না পেয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে পশ্চিমে কেডির মোড় গোল চত্বর এবং দক্ষিণে কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান ফটক পর্যন্ত তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বেলা ১১টা থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টা থেকেই নওগাঁ বিভিন্ন উপজেলা ও নওগাঁ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা খ- খ- মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। কর্মসূচির চলাকালে শহরের অন্যতম প্রধান সড়ক ব্রিজের মোড়-ডিগ্রি কলেজ মোড় সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলায় ২টার দিকে জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল কাইয়ুম নেতাকর্মীদের পানি খাইয়ে অনশন ভঙ্গ করান।
অনশন চলাকালে নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিকের (নান্নু) সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সামসুজ্জোহা খান, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. ছালেক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম (ধলু), জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক শেখ রেজাউল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, মামুনুর রহমান (রিপন), শফিউল আজম (রানা), আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ফজলে হুদা বাবুল, পোরশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহ মো. মোজ্জাম্মেল প্রমুখ।
বিএনপির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সামসুজ্জোহা খান বলেন, অতীতে ৬২, ৬৯ ও ৮৯ এর আন্দোলনে পযন্ত স্বৈরাচার আইয়ুব, এরশাদদের পতন হয়েছিল, সে রকম ভাবে রাজপথে আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই সরকারের পতন ঘটিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। সল্প কর্মসূচি দিয়ে কখনোই এই সরকারকে বাধ্য করানো যাবে না। তাই শিঘ্রই কঠোর কর্মসূচির ডাক আসছে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে সবার জীবন বাজি রেখে রাজপথে নামার আহ্বান জানান তিনি।
জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু বলেন, সরকার মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছেন। তিনি বাংলাদেশের তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, দুইবারের বিরোধী দলের নেতা। তিনি দীর্ঘ ৯ বছর আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। আজ তাঁকে রাজনৈতিক ও মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায় দিয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এটা চলতে পারে না। তিনি গুরুতর অসুস্থ, তাঁর সুচিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই। একজন নাগরিক হিসেবে সুচিকিৎসা পাওয়া তাঁর মৌলিক অধিকার। কঠোর আন্দোলন ছাড়া দেশনেত্রীকে মুক্ত করা সম্ভব নয়।
সরকার পরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আজ তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এই মূহূর্তে তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে মুক্তি দিয়ে বিদেশে নিয়ে সুচিকিৎসা করার প্রয়োজন। রাজপথের কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমেই তাঁকে মুক্ত করা ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে জানান বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা।