রবিবার (৯ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন,নাগরিকদের তথ্য ফাঁসের ঘটনা তদন্ত করা হবে। কেউ জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হবে না।

এনআইডি সার্ভার থেকে বেশ কিছু তথ্য ফাঁস হয়েছে। কীভাবে এই ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, এনআইডি আমাদের অধীনে এলেও আমরা এখনো তার কার্যক্রম শুরু করিনি। বর্তমানে তা নির্বাচন কমিশনের হাতে রয়েছে। আইনি জটিলতা শেষ করে আমরা হাতে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করতে চাই।

তবে এই ফাঁস হওয়ার ঘটনার কথা আমরা শুনেছি, বিস্তারিত জেনে আপনাদের জানাতে পারব। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে বিস্তারিত তথ্য নেই। আপনি যেমন শুনেছেন, আমরাও ঠিক সেরকমভাবে শুনেছি।

ডিজিটাল নিরাপত্তায় যদি কোনো ফাঁকফোকর থাকে কিংবা কেউ দায়ী থাকেন, সে ক্ষেত্রে আপনারা কী ধরনের ব্যবস্থা নেবেন, জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, আগে আমাকে শনাক্ত করতে হবে যে ঘটনাটা কী ঘটেছে। কতখানি ফাঁস হয়েছে, সেগুলো তো আমাদের অবশ্যই জানতে হবে। তারপর যদি দেখি, কেউ এটা করেছে, বা সহায়তা করেছে, তাহলে অবশ্যই আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সেই জায়গায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কখনো কাউকে ছাড় দেয় না, সেটি আপনারা দেখেছেন। আগে বিস্তারিত জেনে, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে কিনা; জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুরু করার মতো উপাদান এখনো আমাদের হাতে আসেনি। তবে আমরা প্রস্তুত আছি। আমাদের সাইবার ইউনিটগুলো এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আমরা আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছি।

নাগরিকদের তথ্য ফাঁস নিয়ে কথা বলেন এনআইডির মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম হুমায়ুন কবীর

রোববার (৯ জুলাই) দুপুরে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে আয়োজিত অপর এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেছেন, আমাদের সার্ভারে কোনো প্রকার তথ্য ফাঁস হয়নি। আমাদের সার্ভার সুরক্ষিত রয়েছে।

এনআইডি ডিজি বলেন, ১৭১টি প্রতিষ্ঠান আমাদের এনআইডি সার্ভার থেকে সেবা নেয়। তাদের কারও কাছ থেকে তথ্যফাঁস হতে পারে। যাদের কাছ থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে, আমরা তদন্ত করে সেই প্রতিষ্ঠানকে শনাক্ত করে, তাদের সার্ভিস বন্ধ করে দেব এবং আমরা চুক্তি বাতিল করব।

তিনি বলেন, এনআইডি সার্ভার থেকে কোটি কোটি ডাটা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের এনআইডি সার্ভারের সঙ্গে অন্য কোনো সার্ভারের সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এ ছাড়া আমরা আমাদের সাইটে অ্যাবনরমাল হিট পাইনি।

এ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের ডাটা সেন্টার ও ম্যানেজমেন্টে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। থার্ডপার্টির মাধ্যমেও তথ্যফাঁস হয়নি। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি পার্টনারদের সাইট অডিট করব। আইসিটি বিশেষজ্ঞ দিয়ে তদন্ত কমিটি করাব। এরপর ব্যবস্থা নেব।

এ সময় এনআইডির সিস্টেম ম্যানেজার আশরাফ হোসেন বলেন, এনআইডির সার্ভার হ্যাক হয়নি। সেবা নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্ভার হ্যাক হতে পারে। এনআইডির সার্ভারে কোনো হুমকি নেই।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের একটি ওয়েবসাইট থেকে কয়েক লাখ নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ‘ফাঁস’ হয়েছে। যেখানে অনেকের পুরো নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরও রয়েছে।
শুক্রবার (৮ জুলাই) প্রযুক্তিবিষয়ক মার্কিন ওয়েবসাইট পত্রিকা টেকক্রাঞ্চ এমন খবর দিয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version