মোঃরোমান বেপারী, মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরের শিবচরে দরপত্র ছাড়াই শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে সরকারি চারটি বড় গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার ও রোববার দিনের বেলায় প্রকাশ্যে সরকারি এই গাছগুলো কাটা হলেও তা জানেন না সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তরের কর্মকর্তারা।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে একশ শয্যায় উন্নীতকরণ করার জন্য নতুন ভবন নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর। ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে থাকা একটি পুরনো পুকুর সম্প্রতি বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। এক্ষেত্রে নেওয়া হয়নি স্থানীয় বা পৌরসভার কোন অনুমতি। পুকুর ভরাট শেষে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরের ভিতরে থাকা ভরাটকৃত পুকুরের পড়ে ও তার আশে পাশে থাকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি ২টি মেহগনি ও ২টি কড়াই গাছ শ্রমিক দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে। এক্ষেত্রেও নেওয়া হয়নি সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তরের অনুমতি।
অভিযোগ উঠেছে, সরকারি এই গাছগুলো স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশে কেটে ফেলা হয়। ফলে গাছগুলো কাটতে গিয়ে হাসপাতাল কর্তব্যরতদের কোন প্রকার প্রশ্নে মুখোমুখি হতে হয়নি শ্রমিকদের।
এ বিষয়ে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ বলেন, এখানে ঠিকাদার আছে আর স্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগ আছে। গাছ কাটার বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।
গাছগুলো তো উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সের, যা দরপত্র ছাড়া কাটার বিধান আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের নতুন ভবন হচ্ছে তো সেখানে কি করা লাগবে না করা লাগবে সেটা স্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগ দেখেন। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
জানতে চাইলে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিবচর স্বাস্থ্য কপ্লেক্সের অভ্যন্তরে গাছ কাটার প্রসঙ্গে আমি অবগত নই। সরকারি গাছ কাটতে হলে কিছু প্রক্রিয়া আছে। গাছ কেন কাটা হচ্ছে সেটা উল্লেখ করতে হবে। পরে বন বিভাগ গাছের রেট দিবে। পরে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ওই গাছ কাটার অনুমতি পাবে। হাসপাতালের অভ্যন্তরে বিনা অনুমতিতে যদি গাছ কাটা হয় বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শিবচর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘সরকারি গাছের বিষয়ে যে কোন দপ্তরেরই হোক না কেন? সেটা কাটতে হলে বন বিভাগ কিছু দায়িত্ব আছে। শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে গাছ কাটার বিষয়ে আমাদের কেউ অবহিত করেনি।
সরকারি গাছ জব্দ ও এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া কথা জানালেন শিবচর উপজেল নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরের পুকুর ভরাটের কথা শুনেছি। কিন্তু গাছ কাটার কথা জানি না। আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখব। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনে গাছ জব্দ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।