বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪

৩০ সেকেন্ড ১৪৫ ও মিনিটে ২৫৮ বার দড়ি লাফিয়ে গিনেস বুকে বাংলাদেশের রাসেল

যা যা মিস করেছেন

ছেলেবেলায় স্কিপিং বা দড়ি লাফ খেলা খেলেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর সেই স্কিপিং বা দড়ি লাফে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠালো বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান রাসেল ইসলাম।

মাত্র ২১ বছর বয়সেই স্কিপিং রোপে (দড়ি লাফে) বিশ্ব রেকর্ড করেছেন রাসেল। তার এ সাফল্য বিশ্ববাসীর কাছে দেশের নাম উজ্জল করেছে বলে মনে করে ঠাকুরগাঁও জেলার সুশীল সমাজ। সেই কারণে রাসেলকে এক নজর দেখতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন আসছেন। রাসেলের এমন সাফল্যের প্রশংসা করছেন তারা।

রাসেল ইসলাম ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের সিরজাপাড়া গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। তিনি শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে অধ্যায়নরত।

 

জানা যায়, স্কুলজীবন থেকেই রাসেলের ইচ্ছা ছিল স্কিপিং রোপে বিশ্ব রেকর্ড করার। সেই চিন্তা নিয়েই ২০১৭ সাল থেকে তিনি স্কিপিং রোপের চর্চা শুরু করেন। বাসার আশপাশে বিভিন্ন সড়কের ধারে যখন যেখানে সময় পেয়েছে সেখানেই প্রতিনিয়ত স্কিপিং রোপের চর্চা করে গেছেন।

অবশেষে নিজেকে এই খেলায় পরিপূর্ণ মনে হলে ২০১৯ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেন রাসেল। স্কিপিং রোপের ওপর দু’টি বিষয়ে তিনি চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। একটি ৩০ সেকেন্ডের আর অন্যটি ১ মিনিটের ওপর।

এক পায়ে ৩০ সেকেন্ড স্কিপিং রোপে ১৪৪ বার লাফানোর বিশ্ব রেকর্ড থাকলেও রাসেল লাফিয়েছেন ১৪৫ বার। আর ১ মিনিটে এক পায়ে ২৫৬ বার লাফানোর বিশ্ব রেকর্ড থাকলেও রাসেল লাফিয়েছেন ২৫৮ বার। এর মাধ্যমে তিনি নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েন। গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাসেল অনলাইন থেকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সনদপত্র পান।

স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বলেন, রাসেলের কারণে দেশবাসী আমাদের গ্রামের নাম জানতে পারছে। এখন অনেকেই আসছে তার বাসায়। রাস্তাঘাটে অনেকেই বলছেন- বিশ্ব রেকর্ড করেছে যে রাসেল, তার বাসা কোনটা? এটা শুনতেই অনেক ভালো লাগছে। আমাদের গ্রামের সন্তান আজ আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে।

রাসেলের বাবা বজলুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলে একটি দড়ি নিয়ে লাফাতো। তাকে বলেছিলাম এসব করে কী হবে বাবা। সে আমাকে বলতো আব্বা আমি একদিন এই খেলা দিয়েই তোমাদের মুখ উজ্জ্বল করব। এখন সত্যিই সে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে।

তিনি আরও বলেন, বাবা হয়ে আমি আমার সন্তানকে তেমন কোনো কিছু দিতে পারিনি। তবে সে আমাদের দিয়েছে। সকলের মুখে আমার ছেলের নাম। আমি শুধু আমার ছেলেকে সাহস দিয়েছিলাম। এই সাহস নিয়েই এগিয়ে গেছে আমার ছেলে।

স্কিপিং রোপে বিশ্ব রেকর্ড করা রাসেল ইসলাম জানান, স্কিপিং রোপ আমার ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল। ইন্টারনেটে স্কিপিং রোপের ওপর ভিডিও দেখতাম। স্কিপিং রোপে কতবারে বিশ্ব রেকর্ড হয়েছে তা নজরে রাখতাম। ওই বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড করার স্বপ্ন দেখতাম। স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি প্রতিনিয়ত চর্চা করে যাই। পড়াশোনার পাশাপাশি যখন যেখানে সময় পেতাম সেখানেই চর্চা করে যেতাম।

রাসেল আরও জানান, দীর্ঘদিন চর্চার পরে যখন দেখলাম আমি এখন সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড করতে পারব তখন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে চ্যালেঞ্জিং আবেদন করি। এরপর সেখান থেকে আমাকে তিন মাস পরে কিছু গাইডলাইনসহ একটি রিপ্লাই দেওয়া হয়। সেখানে তারা তাদের নিয়ম মতো কিছু ভিডিও চায় আমার কাছে। সেই সঙ্গে কীভাবে সেগুলো করতে হবে তারও বিস্তারিত দেওয়া হয়। এরপর আমি কিছুদিন আরও মনোযোগ দিয়ে সেই কাজগুলো করে তাদের পাঠিয়ে দেই। অবশেষে আমি বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে একটি নতুন রেকর্ড করি। যার জন্য আমাকে দুটি সনদপত্র দেওয়া হয়। আমি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। তারা আমার মেধাকে গুরুত্ব দিয়েছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, রাসেলের পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সহযোগীতা করা হবে। এছাড়াও পরবর্তিতে রাসেল যে কোনও স্থানে এই খেলায় অংশগ্রহন করতে চাইলে আমার তাকে সর্বাত্তক সহযোগীতা করবো।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security