ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে তাল-লয়ে মিলে বেজে ওঠা টুংটাং টুংটাং শব্দে মেতে উঠেছে কামারপাড়া।এরপর পাথরে ঘষে ঘষে শান দেওয়া। অবশেষে ব্যবহারের উপযোগী হয়ে পূর্ণতা পাচ্ছে দা, বটি, ছুরি চাপাতিসহ কোরবানির পশু জবাই ও কাটাকাটির বিভিন্ন সরঞ্জাম। তাই পুরোদমে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কামার কারিগররা। ছুরি, চাপাতি, দা, বটি তৈরি ও শান দেওয়ায় ব্যস্ত রাজধানীর কামারপট্টিসহ বিভিন্ন এলাকায় থাকা কামার কারিগররা।
আগামী রোববার (১০ জুলাই) ঈদ-উল আযহা। নাওয়া-খাওয়া ভুলে কামারদের সম্পূর্ণ ধ্যান এখন তাদের কাজের ওপর। রাত-দিন চলছে তাদের কর্মযজ্ঞ। এদিকে, কোরবানির পশু কাটাকাটির বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি ও পুরোনো ছুরি চাপাতি শান দিতে কামারের দোকানে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে, নতুন ছুরি-চাপাতিও বিক্রি হচ্ছে।
কামার কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবছর কোরবানির পশু কাটার সরঞ্জামের দাম বেড়েছে। কারণ, বাজারে লোহা-ইস্পাতের দাম বাড়তি। এদিকে কয়লার দামও বাড়তি। সব মিলিয়ে তৈরি করা ছুরি-চাপাতি ও দা-বটির মজুরিও বেড়েছে।
কামাররা বলছেন, বছরের ১১ মাসে তাদের তেমন কাজ থাকে না। কোরবানির এক মাসই তাদের কাজের মৌসুম। এ সময় তাদের আয়ের সুযোগ হয়। কোরবানির ঈদের আগের এক মাসে ব্যবসা হয়।
সাধারণত এ দুই ধরনের লোহা ব্যবহার করে ছুরি, চাপাতি, বটি ও দা বানানো হয়। প্রতি কেজি চাপাতি এক হাজার টাকা। এতে লোহাভেদে দামের তারতম্য রয়েছে।সারা বছর তেমন কোনো কাজ থাকে না। বছরে এই মৌসুমে কাজ করি। এতে কিছু লাভ থাকে। বছরের বাকি সময় টুকটাক বাসুলা, শাবল, সেনি তৈরি ও শান দিয়ে কেটে যায়।
অনেকেই রেডিমেট বানানো জিনিস নিয়া যাইতাছে। ছোট ছুরি ৩০০ টাকা, চাপাতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা। দা ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা, জবাই করার ছুরি এক-দেড় হাজার টাকা। তবে লোহার মানভেদে এর দাম কম বেশি হয়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার কামারপট্টির কারিগররা জানান, কোরবানির পশু কাটার সব লোহার সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এখন লোহার দাম বেশি, কয়লার দাম বেড়েছে, কারিগরদের মজুরও বেড়েছে। এখন সব তৈরি করা হচ্ছে, ঈদের তিনচার দিন আগে বেচাকেনা বেড়ে যায়।