আরিফ শেখ , রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুরের তারাগঞ্জে এক গৃহবধূকে নির্যাতন ও জোরপূর্বক গর্ভপাত করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গত বুধবার তারাগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর শ্বশুরকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা কুর্শা ইউনিয়নের রহিমাপুর হাজীপাড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ে রাজিনা আখতার(১৯) সঙ্গে একই গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে মাহাবুল ইসলামের ২০২০ সালের জুলাই মাসে বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুকের টাকার জন্য রাজিনাকে তাঁর স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন চাপ দেয়। একপর্যায়ে তাকে মারধর করে। বাধ্য হয়ে তিন দফায় রাজিনার পরিবার ৫ লাখ টাকা মাহাবুল ও তাঁর পরিবারকে দেন। মাহাবুলের সঙ্গে ঘর সংসার করা অবস্থায় গর্ভধারণ করেন রাজিনা। তাঁর গর্ভধারণে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন। সন্তান নষ্ট করতে চাপ দেন রাজিনাকে। কিন্তু রাজিনা রাজি না হওয়ায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন পথ খুঁজতে থাকেন। একের পর এক চেষ্টা করেন তাঁর গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে। রাজিনা আখতার অভিযোগ করে জানান, গত বছরের ১৪ জুলাই তাঁর শ্বাশুড়ি তাকে রান্না করা সেমাই খেতে দেন। কয়েক চামচ সেমাই খেয়ে রাজিনার গন্ধ লাগলে তিনি আর সেমাই খেতে চান না। একপর্যায়ে শ্বাশুড়ি মাহমুদা বেগম, ননদ শাবানা খাতুন মুখ চেপে ধরে জোর করে সেমাই খাওয়ান। দুই ঘণ্টা পর পেটের ব্যথা শুরু হলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে রাজিনাকে রংপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে তাঁর পেট থেকে মৃত্যু সন্তান গর্ভপাত করান। এ ঘটনার পাঁচ মাস পর তাকে তালাক নোটিশ দেওয়া হয়। এ ঘটনায় রাজিনা আখতার বাদি হয়ে মাহাবুল ইসলাম, মাহামুদা বেগম, আজিজুল হক, সাবানা খাতুন, কবির হোসেনসহ ৫জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত বুধবার তারাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় ওই গৃহবধুর শ্বশুর আজিজুল হককে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। তারাগঞ্জ থানার ওসি ফারুক আহম্মদ বলেন, পাঁচ জনকে আসামী করে ওই গৃহবধূ থানায় মামলা করেছেন। একজনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামীদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আপনি যা যা মিস করেছেন
Add A Comment