কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন: কোভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন, যুদ্ধ ও দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ প্রান্তিক পর্যায়ে নারী দল সদস্যদের আয় বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিস) পরিচালিত অ্যাডভান্সিং ইকুয়্যালিটি অব উইমেন অ্যান্ড মারজিনালাইজড্ পিপল (আওয়াম) প্রকল্পের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরন করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে ২০জন নারীদল সদস্যকে আয় বৃদ্ধিমূলক দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ শেষে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে নারী সদস্যদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।
নেত্রকোনা পৌরশহরের পূর্বকাটলী এলাকার কেন্দ্র অফিসে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন এবং নারী সদস্যদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেন জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রৌফ সরকার।
প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন সফল নারী উদ্যোক্তা ও সেলাই প্রশিক্ষক আফরোজা নার্গিস ও কণা আক্তার।
প্রশিক্ষণ উদ্বোধনকালে উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রৌফ সরকার বলেন, আজকের এই আয়োজন দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ। তৃনমুল পর্যায়ে বিভিন্ন কারনে ক্ষতিগ্রস্থ নারী সদস্যদের এই প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন সহায়তার মাধ্যমে প্রত্যেককেই একজন উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরী করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরা বলেন, নারীদের আত্মনির্ভরশীল হওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই। পরিবারে সমাজে নিজেকে ক্ষমতায়িত করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন অর্থনৈতিকভাবে স্বাববলম্বী হওয়া। আর তার জন্য বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। আমি বলবো এই সেলাই মেশিন নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। নিজেদের কাজ করতে হবে। এলাকায় কাজ না থাকলে শহরে অনেক সফল উদ্যোক্তা রয়েছে। তাদের সাথে যোগাযোগ করে কাজের অর্ডার নিতে হবে। নিজেদের ভাগ্য নিজেদেরই পরিবর্তন করতে হবে। সন্তানদের লেখাপড়া শিখে মানুষ করতে হলে নারীদের আয়ের কোন বিকল্প নাই।
নারী প্রগতি সংঘের কেন্দ্র ব্যবস্থাপক মৃনাল কান্তি চক্রবর্তী বলেন, আওয়াম প্রকল্পের লক্ষ্য হলো নারী ও কিশোরীদের সমন্বিত ও স্বাধীনভাবে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষমতায়িত করা। তারই লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০২০ সাল থেকে করোনাকালীন সময় হতেই প্রান্তিক নারী উদ্যোক্তারা ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে নিজেদের পুজিঁ ভেঙ্গে মানবেতর জীবন যাপন করছে। নারী প্রগতি সংঘ মনে করে নারীদের আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে উঠতে হলে আয় বৃদ্ধিমূলক কাজের বিকল্প নেই। তার জন্য ই আজকের এই প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন বিতরণ।
তিনি আরো বলেন, প্রশিক্ষণ বাদে উপকরন সহায়তা বাবদ যে অর্থ বরাদ্দ রয়েছে তা দিয়ে মেশিন ক্রয় করা সম্ভব নয়। সদস্যদের আগ্রহের প্রেক্ষিতেই প্রকল্পের বরাদ্দের সাথে তাদের নিজস্ব অনুদান মিলিয়ে এই সেলাই মেশিন ক্রয় করা হয়েছে। যা স্থায়ী সম্পদ হিসেবে তাদের ভবিষৎ জীবনে অবদান রাখবে।