রুহুল আমিন ( গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি)
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় মাওনা ইউনিয়নের জয়নাতলী এলাকায় সংরক্ষিত গজারি বন উজাড় করে কলাগাছ রোপণ করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে আশসাফ আলী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বন বিভাগ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গজারি গাছসহ বিভিন্ন গাছ উদ্ধার করেছে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জয়নাতলী এলাকার বন বিভাগের সিএস ১৫৬৮ দাগে ২০১২-১৩ অর্থবছরে বন বিভাগ বনায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরে ওই বাগান উপকারভোগী হিসেবে আশসাফ আলীকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে কয়েক বছর পর গাছ বড় হলে তিনি ধীরে ধীরে সেগুলো কেটে বিক্রি করতে থাকেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আশসাফ আলী প্রথমে তার নিজস্ব বাগানের গাছ কেটে বিক্রি করেন। এরপর তিনি সংলগ্ন সংরক্ষিত গজারি বনের গাছ কেটে জমি খালি করতে থাকেন। পরে জমি দখলের উদ্দেশ্যে সেখানে কলাগাছ রোপণ করেন এবং ক্রমাগত পাশের বন থেকে গজারি গাছ কেটে জমির পরিধি বাড়ানোর চেষ্টা চালান। উপকারভোগী ইমান আলী বলেন, আশসাফ দীর্ঘদিন ধরে গজারি বনের গাছ কেটে বিক্রি করছে।
সে শুধু তার বাগানের গাছই কেটে ফেলেনি, পাশাপাশি বন বিভাগের সংরক্ষিত গজারি গাছও কেটে সেখানে কলাবাগান করেছে। একদিন সে আমার বাগানের গাছ কাটতে গেলে আমি বাধা দিই। তখন সে আমাকে কুড়াল দিয়ে আঘাত করে। আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি, এখন কিছুটা সুস্থ আছি।
আরেক উপকারভোগী শফিক বলেন, “আমিও ২০১২-১৩ অর্থবছরে বন বিভাগের আওতায় উপকারভোগী হিসেবে এই বাগান পেয়েছিলাম। আমার গাছ এখন অনেক বড় হয়েছে। কিন্তু আশসাফ তার বাগানের গাছ কেটে শেষ করে ফেলেছে। ফলে আশঙ্কা করছি, সে আমার বাগানের গাছও কেটে ফেলতে পারে।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গজারি বনের গাছ কাটা ও কলাগাছ রোপণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসময় আশসাফ আলীর কেটে ফেলা গজারি গাছসহ বিভিন্ন গাছ জব্দ করা হয়। রাথুরা বিট কর্মকর্তা বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি, সংরক্ষিত গজারি বনের গাছ কেটে জমি খালি করা হয়েছে এবং সেখানে কলাগাছ লাগানো হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এই কলাগাছের আড়ালে বন উজাড় করে গাছ বিক্রি করা হচ্ছে।
আমরা তাৎক্ষণিকভাবে কাটা গাছ জব্দ করেছি এবং অবৈধভাবে লাগানো কলাগাছ অপসারণ করে বনায়ন কার্যক্রম শুরু করেছি। এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, বনের গাছ কেটে কলাবাগান তৈরি করা একটি চিহ্নিত কৌশল, যা মূলত বন দখলের উদ্দেশ্যে করা হয়। এই ধরনের অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।