দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি –
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে টিকার সরঞ্জাম গেলেও সেখানে যাননি দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য সহকারী মো. হযরত আলী। দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি তুলে ধরে জাতীয় দৈনিক পত্র-পত্রিকা ও অনলাইনে সংবাদ প্রকাশের পর কারণ দর্শানোর নোটিশসহ সাময়িক ভাবে বেতন বন্ধ রাখে জেলা সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তৃপক্ষ।
তবে এবার সেই স্বাস্থ্য সহকারী নিজের সুবিধা মতো বদলির আবেদনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার ফরওয়ার্ডিং/সুপারিশ করার গুঞ্জন উঠেছে। এ নিয়ে চলছে নানান সমালোচনাও। এর আগে গত রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের জাগিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্থায়ী কেন্দ্রে আশপাশের এলাকার শিশুদের টিকা প্রদানের কথা থাকলেও সেখানে যাননি স্বাস্থ্য সহকারী মো. হযরত আলী। ফলে টিকার সরঞ্জাম ফিরে আসে হাসপাতালেই টিকা পায়নি শিশুরা।
এ নিয়ে দৈনিক পত্র-পত্রিকা ও অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে এলে স্বাস্থ্য সহকারী মো. হযরত আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। এদিকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে সেই স্বাস্থ্য সহকারীর সাময়িকভাবে বেতন বন্ধ,জেলা সিভিল সার্জনের কারণ দর্শানোর নোটিশ, জাবাব দাখিল প্রতিক্রিয়া চলমান থাকা সত্ত্বেও তার নিজ ইচ্ছে স্বাভাবিক নিয়মেই বদলির বিষয়টি ওই ঘটনাকে ধামাচাপার প্রশ্ন উঠেছে। একাধিক ব্যক্তি বলছেন, স্বাস্থ্য সহকারী হযরত আলীর দায়িত্বে অবহেলা ও কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি সুস্পষ্ট।
সরকারি চাকরি করলে নিয়মের ভেতর দিয়ে চলতে হয়। কিন্তু নিয়মমতো শোকজ চলমান থাকা অবস্থায়ও স্বাভাবিক নিয়মে নিজের ইচ্ছেমতো বদলির সুযোগটা কিভাবে পাই সে? তাকে বদলি করবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ। সেটা হবে তার কর্মের ফল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারণ দর্শানোর নোটিশে ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয় স্বাস্থ্য সহকারী হযরত আলীকে। গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারী) নোটিশের জবাব দাখিল করেন সেই স্বাস্থ্য সহকারী।
এরই মধ্যে তার বেতন সাময়িকভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। তবে জবাব দাখিলের পরপরই নিজের সুবিধায় বদলির পায়তারা শুরু করে ওই স্বাস্থ্য সহকারী। ওই স্বাস্থ্য সহকারীর বদলির সুপারিশ করার গুঞ্জনের ঘটনাটি স্বীকার করেছেন ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানজিরুল ইসলাম রায়হান। শোকজ প্রক্রিয়া চলমান থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ না নিয়ে ওই স্বাস্থ্য সহকারীর নিজ ইচ্ছে মতো বদলির সুযোগ কেন দেওয়া হচ্ছে প্রশ্নে উত্তরে তিনি বলেন, আমি চাচ্ছিলাম এ জামেলাটা চলে যাক।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় নেত্রকোনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. অনুপম ভট্টাচার্য এর সঙ্গে। তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, বদলির আবেদনের বিষয়টি আমি অবগত না। সুপারিশের কাগজ আসলেও আমি দেব না। এখন বদলি দেওয়া তাকে সম্ভব না। তাকে শোকজ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সে কর্মস্থলে যায়নি উর্ধতন সব জায়গায় জানানো হয়েছে। আমি ময়মনসিংহে অফিসিয়াল কাজে ছিলাম তার জবাব টা আমাকে পাঠিয়ে থাকলে আগে আমি দেখি তারপর পরবর্তীতে যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।