কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন: নেত্রকোনার দুর্গাপুরে যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল মিয়াকে (৪২) ছাড়াতে থানায় জামাত ইসলামি ও চরমোনাই পীরের ইসলামিক আন্দোলন দলের নেতৃবৃন্দ। খবর পেয়ে যুবদলের নেতাকর্মীরা থানায় উপস্থিন হন। ইসলামী দলের নেতাকর্মীদের দাবি গ্রেফতারকৃত কামাল তাদের ইসলামিক আন্দোলনের নিবন্ধিত সদস্য। অন্যদিকে যুবদলের নেতাকর্মীদের দাবি গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি ওয়ার্ড যুবলীগের পদধারী নেতা। তর্কবিতর্ক ও তথ্য প্রমাণের একপর্যায়ে তাকে ছাড়াতে ব্যর্থ হয়ে ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ থানা ত্যাগ করেন।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে যুবলীগ নেতাকে আদালতে প্রেরণ করে থানা পুলিশ। এরআগে গত সোমবার দিনগত রাতে তাকে ভাঙ্গা ব্রীজ এলাকা থেকে ডেভিল হান্টের অভিযানে কামালকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত কামাল মিয়া দুর্গাপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ধান ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়ার ছেলে এবং একই ওয়ার্ডের যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল মিয়া।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে দুর্গাপুর পৌর জামাত ইসলামির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হাওলাদার ও চরমোনাই পীরের দল ইসলামিক আন্দোলনের উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদসহ ইসলামিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ কামালকে ছাড়াতে থানায় উপস্থিত হন।
দুর্গাপুর পৌর যুবদলের সদস্য সচিব সম্রাট গণি নাগরিক টিভিকে বলেন, দুর্গাপুরের রিকশা ওয়ালাসহ যে কোন ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারবেন সিরাজ ও তার ছেলে কামাল কোন দল করে। পুলিশ ধরে নিয়ে আসার পর প্রথমে ফোন দিছে স্থানীয় চরমোনাইয়ের ইসলামি আন্দোলনের মামুনুর রশিদ। সে এতোদিন চরমোনাইয়ের দল করছে। অথচ তারই আপন ভাই কায়েস ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক। তিনি (মামুন) কীভাবে ফ্যাসিস্ট দোসর ও ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামালকে ছাড়াতে জামাত নেতা হাবিবুর রহমানকে থানায় নিয়ে আসলেন।
এবিষয়ে ইসলামী আন্দোলন দুর্গাপুর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ জানান, কামাল আমাদের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। গত সাত-আট বছর ধরে চরমোনাই মাহফিলে যেতেন এবং আমাদের দলের নিবন্ধিত একজন সদস্য। তাকে কেন ধরে নিয়ে গেল তা জানার জন্য থানায় গিয়েছিলাম। তার বাবা ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি তা আমরা জানি। আমাদের জানা মতে কামাল আ.লীগের কোন দায়িত্বে ছিল না। থানা থেকে জানতে পারি সে ওয়ার্ড যুবলীগের দায়িত্বে আছে। পাশাপাশি বিগত নির্বাচনকালীন সময়ে মেয়র ছিলেন তার সাথে ফুলেল মালা না ফুলের তোরা নিয়ে ছবি দেখিয়েছে ওসি।
দুর্গাপুর পৌর জামাতে ইসলামির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ইসলামি আন্দোলনের কিছু ছেলেরা আমাকে ফোন করে বলেছে তাদের একজন কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করছে। থানায় গিয়ে দেখি ইসলামি আন্দোলনের বেশ কিছু ওলামা একরাম। তখন আমি কামাল মিয়াকে চিনিও না। ওসি সাহেব ছবি দেখালেন আ.লীগের নেতাদের সাথে কামালের ছবি এবং তা দেখে আমিও লজ্জা পেয়েছি।
যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে দুর্গাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান জানান, ডেভিল হান্টের এক অভিযানে কামাল মিয়াকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালের দিকে ইসলামিক দলের নেতাকর্মীরা সুপারিশ নিয়ে এসেছিলেন। আজ (সোমবার) তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।