জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম হটস্পট রাজধানীর উত্তরায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পতিত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকর্মীকেও হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার উত্তরার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এ নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া, এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা এবং কনস্টেবল হোসেন আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ বলেন, সাবেক ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম, উত্তরা পূর্ব থানা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মো. শাহিনুল ভূইয়া, উত্তরা পশ্চিম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মানোয়ার ইসলাম চৌধুরী রবিন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আল মামুন মন্ডল, উত্তরা ছয় নম্বর সেক্টর আওয়ামী লীগ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. বশির উদ্দিন এবং মহানগর এক নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন রুবেলকে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
অভিযুক্তরা বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের জন্য আমরা আবেদন করেছিলাম। ট্রাইব্যুনাল আমাদের সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি তাদের হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে, ট্রাইব্যুনাল আইনে দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধনী আনা হয়। নতুন সংশোধনীতে তদন্তকালে ট্রাইব্যুনালকে নথিপত্র ও আসামিদের সম্পত্তি জব্দের ক্ষমতা দেওয়া হয়। এছাড়া, এখন থেকে আসামিদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবেন বিশেষ আদালত।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, ২০২৪ সালের সংশোধনীতে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যে, আসামির সম্পত্তি ভুক্তভোগী বা রাষ্ট্রকে দেওয়া হবে। এখানে সংশোধনী এনে এই ধারাটিকে কার্যকর করার জন্য ট্রায়ালের সময় আসামির সম্পত্তি ফ্রিজ করে রাখা বা ট্রাইব্যুনালের অধীনে নিতে পারে- সেই ক্ষমতা ট্রাইব্যুনালকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বিদেশযাত্রায় ট্রাইব্যুনাল যেকোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারে, সেই সংশোধনীও নতুন করে আনা হয়েছে।
জুলাই-আগস্টে যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, মোহাম্মদপুরসহ ঢাকার যে কয়েকটি স্থানে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালানো হয় এর মধ্যে উত্তরা ছিল অন্যতম। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়, ভিডিও ফুটেজে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও গুলি ও নির্যাতন চালাতে দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১৮ মামলায় ১২২ জনকে বিচারের মুখোমুখি করেছে প্রসিকিউশন। এর মধ্যে চলতি ফেব্রুয়ারিতেই তিন থেকে চারটি মামলার তদন্ত শেষ হতে পারে।