কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন: নেত্রকোনায় সাত মাসের অন্ত:স্বত্ত্বা দ্বিতীয় স্ত্রী তমালিকাকে গলাকেটে হত্যায় দায়ে স্বামী রাসেল মিয়াকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন জেলা জজ আদালত। এই হত্যা মামলায় সহযোগীদের একজন হিমেলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং আরেক সহযোগী মাজেদাকে এক বছর সশ্রম কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার প্রদান করা হয়েছে।
নিহত তমালিকা বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ভাটিপাড়া গ্রামের মো. রহিজ মিয়ার মেয়ে। এ মামলায় অব্যাহতি প্রাপ্তরা হলেন- রোকেয়া আক্তার, আ. হাশেম ও এজাহার বহির্ভূত অন্যান্য ব্যক্তিগণ।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে নেত্রকোনা জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান এই রায় প্রদান করেন। ২০২০ সালে বারহাট্টা থানায় মামলা নং- ১৩(১) ২০২০, জি.আর নং- ১৩(২) ২০২০ এবং ৪০৯/২০২০ নং দায়রা মোকাদ্দমায় রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাড. আবুল হাসেম (পিপি) এবং আসামিপক্ষের অ্যাড. মো. আব্দুল কাদির এ হত্যা মামলার কৌশলী ছিলেন।
জানা যায়, আসামিগণ একই গ্রামের পাশাপাশি বাড়ির বাসিন্দা। হত্যাকান্ডে এক বছর পূর্বে তমালিকার (২০) সাথে রাসেল মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের আগেই মামলায় অব্যাহতি প্রাপ্ত আসামি রোকেয়াকে বিয়ের পর তালাক দিয়েছিল রাসেল মিয়া। পূর্বের বিয়ের বিষয়টি রাসেল তার পরিবারের কাছে গোপন করেছিল। তমালিকার সাথে বিয়ের কিছুদিন পর প্রথম স্ত্রী রোকেয়ার সাথে যোগাযোগ শুরু এবং একাধিক মোবাইল নাম্বারে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে কথা বলতেন রাসেল মিয়া। নৈতিকস্থলন জনিত কাজে বাধা দিলে তমালিকাকে প্রায় সময় মারধর করতো রাসেল। হত্যাকান্ডের একমাস পূর্বেও তমালিকার মুখে, হাত-পায়ে স্কসটেপ লাগিয়ে মারপিটের পর স্থানীয়ভাবে আপোষ মীমাংসাও করা হয়।
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারী রাত আনুমানিক ৯টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে রাসেল ও তমালিকা ঘুমিয়ে পড়েন। ওইদিন গত রাত ২টার দিকে চিৎকার, চেচামিচি ও হৈচে শুনে ঘরের বারান্দায় তমালিকার গলাকাটা মৃতদেহ দেখতে পান আশপাশের লোকজন। এ সময় তমালিকা সাত মাসের অন্ত:স্বত্ত্বা ছিলেন মামলার বিবরনী থেকে জানা গেছে।