কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন: তিনটি প্রকল্পে স্থানীয়দের নিজস্ব অর্থায়ন ও দুটি প্রকল্পের কাজ না করেই প্রকল্পগুলোর বিপরীতে ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎের অভিযোগ উঠেছে নেত্রকোনা কলমাকান্দার পোগলা ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে।
রবিবার দুপুরে এ বিষয়ে অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেন কলমাকান্দার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসদুজ্জামান। এরআগে গত ২১ আগস্ট ইউএনও বরাবরে অভিযোগ দেন একই ইউনিয়নের বাদে পোগলা গ্রামের মো. আ. হেলিম মিয়া।
অভিযোগে উল্লেখ, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে বাদে পোগলা ঈদগাহ মাঠ হতে সেলিম মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত দুই লক্ষ টাকার রাস্তার কাজ ও একই অর্থবছরে বাদে পোগলা মসজিদ হতে লাক মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় আরও দুই লক্ষ টাকার কাজ। এই প্রকল্প দুইটি উদয়পুর বাজারের নদীর পাড় পর্যন্ত পোগলা গ্রামের ব্যবসায়ী মো. ইদ্রিছ ও আরও কয়েকজনে মিলে নিজস্ব অর্থায়নে কাজ সমাপ্ত করেন। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দে বাদে পোগলা মিরাজ আলীর পুকুর পাড় হতে রেজ্জাকের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজটি মো. রেজ্জাক মিয়া নিজের টাকা দিয়ে নির্মাণ করেছেন। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে টিআর এর প্রথম পর্যায়ে পোগলা মাইজপাড়া হাসিমের বাড়ি হতে শরাফ উদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ও একই অর্থ বছরে আমবাড়ী পাঁকা রাস্তা হতে পলাশহাঁটি মো. কাজল মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ। এই প্রকল্প দুুটিতে দুই লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও কোন কাজ না করেই চার লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন মোজাম্মেল চেয়ারম্যান।
এছাড়াও আরও অভিযোগ রয়েছে, পোগলা একতা আবাসিক হাফিজিয়া মাদরাসার টাকাসহ আরও অসংখ্য নাম না জানা প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছে চেয়ারম্যান। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজি মো. মিয়ার কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করার মুঠোফোনে কথা বলার রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছে। টিসিবির পণ্য থেকে শুরু করে দু:স্থ ভাতার কার্ড ও জন্ম-মৃত্যু সনদসহ টাকা ছাড়া জনগণকে সেবা দেন না এই চেয়ারম্যান। গুচ্ছ গ্রাম প্রকল্প দুর্নীতিতে তার ছোট ভাই মো. সবুজ মিয়া সরাসরি জড়িত ছিল এবং সে প্রচুর সম্পদের মালিক হয়েছে। বিগত দিনে মোজাম্মেল চেয়ারম্যানের বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিল এ ধরনের বিষয়গুলো অভিযোগে উল্লেখ আছে।
পোগলা ইউপির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের সাথে কথা বলার জন্য মোবাইলে ফোন দিলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনের পর থেকে চেয়ারম্যান পলাতক আছেন।
চেয়ারম্যানের ছোট ভাই মো. সবুজ মিয়া বলেন, গুচ্ছ গ্রামের কোন কাজের সাথে আমি জড়িত ছিলাম না। আগের ইউএনও থাকাকালীন সময়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তায় সাবেক ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশনা ও তার পক্ষে বালু সরবরাহ করেছি। আপনার ভাই মোজাম্মেল সাহেবের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি (সবুজ মিয়া) বলেন, ভাইজান নতুন নাম্বার নিয়েছেন কিনা জানা নাই। তার সাথে আমিও যোগাযোগ করতে পারছি না।
কলমাকান্দার ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পোগলা ইউপি’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তার কথা শোনার জন্য মোবাইলে চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে চেয়ারম্যান সাহেব পলাতক আছেন। চেয়ারম্যানের বিকল্প হিসেবে অন্যকে দায়িত্ব পালনের বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন।