দেশ ও গণতন্ত্রবিরোধী ‘অপশক্তি’র যেকোনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (ডিসেম্বর ১৪) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বুধবার দেওয়া বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আমি দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘৭১-এর ঘাতক, মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী জামাত-মৌলবাদী চক্র এবং দেশ ও গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির যেকোনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের এ পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করে। এ জঘন্য হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে তারা হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করে দেয়।
তিনি বলেন, তারা মার্শাল ল’ জারির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করে; স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসকে বিকৃত করে; সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দিয়ে দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে এবং মুক্তমনা, শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ, সংখ্যালঘুদের ওপর হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন চালায়।
শেখ হাসিনা বলেন, এ সন্ত্রাসী-জঙ্গিগোষ্ঠী ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে দেশব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, মানুষ পুড়িয়ে মারে এবং পরিকল্পিত নাশকতা চালায়। এখনও তারা একইভাবে নাশকতা, আগুন-সন্ত্রাস, চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় এনেছে।
তিনি বলেন, বিচার চলমান রয়েছে এবং অনেকগুলো বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে। এসব রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মা শান্তি পেয়েছে। দেশ ও জাতি কলঙ্কমুক্ত হচ্ছে। এ কুখ্যাত মানবতাবিরোধীদের যারা লালন-পালন ও রক্ষার চেষ্টা করছে, তাদেরও একদিন বিচার হবে, ইনশাল্লাহ।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ বাঙালি জাতি চিরদিন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা এ পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের জঘন্যতম প্রতিশোধ নেয়। বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করাই ছিল এ হত্যাযজ্ঞের মূল উদ্দেশ্য।