চা দিবসের সংকল্প, শ্রমিকবান্ধব চা শিল্প’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ চা বোর্ড এর উদ্যোগে আগামীকাল ৪ঠা জুন বর্ণাঢ্য আয়োজনে তৃতীয়বারের মত ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপন এবং প্রথমবারের মত ‘জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৩’ প্রদান করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
অদ্য শনিবার (৩রা জুন) বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার টি রিসোর্ট এন্ড মিউজিয়াম এর সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ চা বোর্ডের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী টিপু মুন্সি এমপি সংবাদ সম্মেলনে জানান, দেশের চা শিল্পের জন্য দিবসটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় পানীয় চা। সিলেটের মালনিছড়া চা বাগানে ১৮৫৪ সালে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চা-চাষ শুরু করা হয়। ধীরে ধীরে এ অঞ্চলের অন্যতম সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে চা শিল্প বিকশিত হতে থাকে। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে ব্রিটিশ শাসনাধীন উপমহাদেশের এ অঞ্চলে চা শিল্পের অগ্রগতি মূলত ব্রিটিশদের মাধ্যমেই বিস্তৃত হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪ঠা জুন ১৯৫৭ সাল থেকে ২৩ অক্টোবর ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত চা বোর্ডের প্রথম বাঙালী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চা শিল্পে জাতির পিতার অসামান্য অবদান ও চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর যোগদানের তারিখকে স্মরণীয় করে রাখতে গত ২০ জুলাই ২০২০ইং মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৪ঠা জুনকে “জাতীয় চা দিবস” ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর আমরা তৃতীয়বারের মত যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করছি। এ বছর চা শিল্পের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন-চা শ্রমিকদের- প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চায়ের রাজধানী বলে সুপরিচিত শ্রীমঙ্গলে জাতীয় চা দিবসের মূল অনুষ্ঠান আয়োজন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
দেশের চা শিল্পে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৮টি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন চা কোম্পানি/ব্যক্তিকে ‘জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৩” প্রদান করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ চা বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে এ বছর প্রথমবারের মত ‘জাতীয় চা পুরস্কার’ প্রদান করা হবে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের ট্রফি ও সদন তুলে দিবেন।
এছাড়া দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী চা মেলার আয়োজন করা হয়েছে। চা মেলাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চা প্রদর্শন ও বিক্রি করা হবে। দর্শনার্থীদের জন্য দিনব্যপী চা মেলা উন্মুক্ত থাকবে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু প্যভেলিয়ন এবং শ্রীমঙ্গস্থ টি মিউজিয়ামে রক্ষিত চা শিল্পের দুর্লভ জিনিসপত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। চা শিল্পের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী সব উদ্যোগের ধারাবাহিকতা ও বর্তমান সরকারের নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে দেশের চা শিল্প টেকসই উন্নয়নে পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের ছায়াতলে দেশের চা শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য চা উৎপাদনকারী ও বিপণনকারীদের পাশাপাশি বড় ভূমিকা পালন করছে এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট অদম্য শ্রমিকগণ। শ্রম শিল্পে শ্রমবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বাগান মালিকগণ কাজ করে চলেছে প্রতিনিয়ত।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো: আশরাফুল ইসলাম প্রমূখ।