ফেনী প্রতিনিধি:
ছেলের উপর হামলার প্রতিবাদ করায় ছাগলনাইয়ায় স্কুল শিক্ষিকা ও তার স্বামী সন্তানকে ছুরিকাঘাত করেছে বখাটেরা।
শনিবার বিকেলে ছাগলনাইয়া সরকারি হাসপাতালের সামনে এ ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে।
আহত স্কুল শিক্ষিকার নাম শামিমা আক্তার (৪৭)। তিনি ছাগলনাইয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা। তার বাসায় থানা পাড়ায়।
শিক্ষিকা ও তার ছেলে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরলেও তার স্বামী ব্যবসায়ী একেএম ফরিদুল আলমের(৫২) অবস্থায় সংকটজনক। তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ তৎক্ষণাৎ হামলাকারী ফয়সাল (২৩) ও তার মা রাবেয়া আক্তারকে(৪২) গ্রেফতার করেছে। তাদের বাসায় থানা পাড়ায়। ফয়সাল শিমুলের ছেলে।
হামলার ঘটনায় স্কুল শিক্ষিকা বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছেন।
মামলায় ফয়সাল তার ভাই তাহসিফ, মা রাবেয়া আক্তার ও মৃত মানিকের ছেলে সনেটকে আসামি করা হয়েছে।
স্কুল শিক্ষিকা শামিমা আক্তার বলেন, ‘পশ্চিম ছাগলনাইয়া গ্রামের থানা পাড়া এলাকার মো.শিমুলের ছেলে ফয়সাল, তাহসিফ ও মৃত মো.মানিকের ছেলে সনেট সহ একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ দীর্ঘদিন যাবত থানা পাড়াসহ আশপাশের এলাকা মাদক সেবন, ব্যবসা ও নানা সন্ত্রাসী তান্ডব চালিয়ে আসছিল। কারনে অকারনে মানুষের উপর হামলা করছিল তারা।
আজ শনিবার বিকেলে তারা আমার ছেলে একেএম আইনুল আলমকে(২২) মারধর করে। সে বাসায় এসে কান্নাকাটি করে হামলার কথা আমাকে জানায়। আমি বিষয়টি জানার জন্য ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালের সামনে যাই। পেছনে আমার অসুস্থ স্বামীও ছিল। তারা (ফয়সাল ও তার কয়েক সাঙ্গপাঙ্গ) আমাদের দেখে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। আমার ছেলে নাকি ম্যাসেঞ্জারে কি লিখছে-একথা বলে তেড়ে এসে আমাকে এবং আমার স্বামীকে ছুরিকাঘাত করে। তখন আমার ছেলেকেও ছুরিকাঘাত করে। আমার হাতে এবং আমার স্বামীর বুকে ছুরি চালায় সন্ত্রাসীরা। তৎক্ষণাৎ যদি পুলিশ না আসত আমাদের জানে মেরে ফেলতো সন্ত্রাসীরা। পুলিশ ওই মুহুর্তে সন্ত্রাসী ফয়সালকে ছুরি সহ আটক করে। ‘
শামিমা আক্তার আরও বলেন, ‘ রক্তাক্ত অবস্থায় আমি, আমার ছেলে ও স্বামীকে উপস্থিত লোকজন ছাগলনাইয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে আমার স্বামীকে পরে ফেনী হাসপাতাল হয়ে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার পরে আমি চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমি সন্ত্রাসী ফয়সাল ও তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দাতাদের গ্রেফতারের জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ছাগলনাইয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সুদ্বীপ রায় জানান, ফরিদুল আলমের বুকে মারাত্মকভাবে ছুরিকাঘাত করেছে ফয়সাল। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফয়সাল সহ দুজনকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে ছুরি ও দুটি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।