সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::
সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে ভোক্তা পর্যায়ে মিলছে না বোতলজাতকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলপি গ্যাস)। আর নির্ধারিত দামে ১২ কেজি বোতলজাতকৃত গ্যাস না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, বাজারে খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা কেউ সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে এলপি গ্যাস বিক্রি করছেন না। তারা ১৩শ পঞ্চাশ টাকা থেকে ১৪শ বোতলজাতকৃত এলপি গ্যাস টাকায় বিক্রি করছেন।
এদিকে বিক্রেতারা বলছেন, ১২ কেজি বোতলজাতকৃত এলপি গ্যাস তাদের বেশি দামে কেনা। তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। যদিও তারা বলছেন সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে তাদের পক্ষে বিক্রি করা সম্ভব নয়।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (৬ ও ৭ এপ্রিল) সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সুলেমানপুর বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
উল্লেখ্য, রোববার (২ এপ্রিল) ১২ কেজি বোতলজাতকৃত এলপি গ্যাসের দাম ১ হাজার ১৭৮ টাকা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। যা গত মাসে ছিল ১ হাজার ৪২২ টাকা। এই হিসাবে দাম কমেছে ২৪৪ টাকা। বিইআরসি রোববার থেকে এই নতুন দাম কার্যকরের নির্দেশ দেয়।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, সুলেমানপুর বাজারে খুচরা পর্যায়ের সব ব্যবসায়ীরা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে এলপি গ্যাস বিক্রি করছেন না। সেই সাথে নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য দ্রব্যের মূল্যে উর্ধগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং না করায় ইচ্ছে মতো বিক্রি করা হচ্ছে সব জিনিসপত্র।
সাধারণ ক্রেতারা বলেন, দাম বাড়ানোর সাথে সাথে বাজারে পণ্যের দাম বাড়ায় ব্যবসায়ীরা, কিন্তু দাম কমলে পণ্যের দাম কমানো হয় না! যে যেভাবে পারছে, ব্যবসা করছে। যার ভুক্তভেগী হচ্ছে সাধারণ ভোক্তারা। অতিরিক্ত দামে ক্রয় করতে হচ্ছে। এলপিজির দাম কমানোর ঘোষণায় তারা কিছুটা স্বস্তিবোধ করেছিলেন। কিন্তু কিনতে গিয়ে তারা দেখেন, পূর্বের বর্ধিত দামই রাখছেন বিক্রেতারা।
সুলেমানপুর বাজারে বোতলজাতকৃত এলপি গ্যাস নিতে আসা আবুল কাশেম ও সাইফুল মিয়া বলেন, ‘টিভিতে দেখলাম সিলিন্ডার গ্যাসের দাম কমছে, বাজারে আইসা জিজ্ঞেস করলাম দাম চায় ১৪শ টাকা। সরকারিভাবে এলপি গ্যাসের দাম কমানোর পরেও কেন বিক্রেতারা আমাদের কাছ থেকে দাম বেশি নিচ্ছেন। এমনিতেই বাজারে সব জিনিসপত্রের দাম বেশি, তারপরও যদি অতিরিক্ত দামে কিনতে হয় তাহলে ক্রেতারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।’
আরো বলেন, ‘বিক্রেতারা যেন সরকারের বেঁধে দেওয়া সঠিক দাম রাখেন, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের বাজার নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের জবাবদিহিতা ও জরিমানার আওতায় আনতে হবে।’
এই প্রতিবেদকের কথা হয় সুলেমানপুর বাজারের বোতলজাতকৃত এলপি গ্যাস বিক্রেতা মোজাহিদ মিয়ার সাথে। তিনি বলেন ‘সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেই দামে আমরা ডিলারদের কাছ থেকে কিনতেও পারি না। তাহলে খুচরা পর্যায়ে কিভাবে আমরা নির্ধারিত দামে বিক্রি করবো? ডিলাররা যদি কম দামে দিত আমরাও কম দামে বিক্রি করতাম। এখন ১৩শ পঞ্চাশ থেকে ১৪শ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।’
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। বাজার মনিটরিং ও ক্রেতাদের সাথে কথা বলে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।