অনলাইন ডেস্ক:-
সাভারের বাসা থেকে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে বুধবার ভোর রাতে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বলেন, তিনি এ বিষয়ে এখনো কিছু জানেন না। তারা কাউকে গ্রেপ্তার করেননি।
প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ভোর চারটার দিকে তিনটি গাড়িতে মোট ১৬ জন ব্যক্তি শামসুজ্জামানের বাসার সামনে যান। তাদের মধ্যে ৭-৮ জন বাসায় ঢোকেন। একজন শামসুজ্জামানের থাকার কক্ষ তল্লাশি করে তার ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, দুইটি মুঠোফোন ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক নিয়ে যায়। বাসায় ১০-১৫ মিনিট অবস্থান করার পর তাকে নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় যান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী বলেন, বটতলার নুরজাহান হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন, একজন নিরাপত্তা প্রহরী, পুলিশের পোশাক পরিহিত একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই), শামসুজ্জামানসহ মোট ১৯ জন ব্যক্তি সাহরীর খাবার খান। ভোর পৌঁনে পাঁচটার দিকে বটতলা থেকে তারা সবাই আবার শামসুজ্জামানের বাসায় যান।
সাদা রঙের তিনটি গাড়িতে তারা বটতলায় এসেছিলেন। যার মধ্যে একটি গাড়ি ছিল নম্বরপ্লেটবিহীন। সিআইডির ব্যবহৃত অন্য দুইটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছিলো (ঢাকা মেট্রো চ ৫৬-২৭৪৭ এবং ঢাকা মেট্রো জ ৭৪-০৩৩১) দ্বিতীয়বার বাসায় যাওয়ার সময় আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু মন্ডল সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ঘটনার সময় শামসুজ্জামানের বাসায় ছিলেন স্থানীয় সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, দ্বিতীয়বার বাসায় এসে তারা জব্দ করা মালামালের তালিকা করেন। শামসুজ্জামানকে জামাকাপড় নিতে বলা হয়। এ সময় কক্ষের মধ্যে দাঁড় করিয়ে তার ছবি তোলা হয়। ৫-৭ মিনিটের মধ্যে আবার তারা বের হয়ে যান। বাসা তল্লাশির সময় দুইবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন উপস্থিত ছিলেন।
তুলে নেওয়ার সময় ওই বাসার মালিককে ডাকেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। পুলিশ তাকে জানায়, শামসুজ্জামানের করা একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে রাষ্ট্রের আপত্তি আছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে বলা হয়, ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী আমবাগানে যাওয়ার জন্য পুলিশের একটি দল ক্যাম্পাসের রাস্তা ব্যবহার করবে। এজন্য আমাকে সাথে থাকতে বলা হয়। পরে সিআইডির পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলা হয়, তারা শামসুজ্জামানের ভাবি যিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এবং তাকে খুঁজছেন। তিনি নাকি বিপদে আছেন, তার বাসা খুঁজতে হবে। পরে রাত তিনটার দিকে জানতে পারি তারা শামসুজ্জামানকে আটক করবেন। আটকের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সেহরি করে সিআইডির সদস্যরা আবারও শামসুজ্জামানের বাসায় যান বলে জানান তিনি।
আজ দুপুর ১টার দিকে সিআইডির ঢাকা বিভাগের উপমহাপরিদর্শক মো. ইমাম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, সাভার ঢাকা জেলার মধ্যে এবং আমার আওতায়। আমার কনর্সানে কেউ অ্যারেস্ট করে নাই, আমি এটুকু বলতে পারি।
তিনি আরও বলেন, সমাজের একজন সাংবাদিক বা প্রভাবশালী সে অপরাধী হোক আর না হোক তাকে সিআইডির কেউ অ্যারেস্ট করতে হলে আমার কনর্সান নিতে হবে।
সূত্র :-Desh Rupantor
দ্যা মেইল বিডি/এম আর আর