দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের পাহাড়ি বনাঞ্চলে চলছে লুটের মহোৎসব। জেলার চারটি রেঞ্জে থাকা ২৩টি বাঁশমহাল এখন পুরোপুরি ইজারাবিহীন। এ শূন্যতার সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ চোর চক্র। রাতের আঁধারে নির্বিচারে কেটে নেওয়া হচ্ছে বনের মূল্যবান বাঁশ ও বেত। চুরির পর সেই বাঁশ ছড়ার পানিতে ভাসিয়ে পাচার করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। একসময় এসব বাঁশমহাল থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হতো কোটি টাকা।

এখন দরপত্র আহ্বান করেও বন বিভাগ ইজারাদার পাচ্ছে না। ফলে রাজস্ব যেমন শূন্য, তেমনি বনভূমি এখন চোরাকারবারিদের দখলে। বন বিভাগ সূত্রের বরাতে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার চারটি রেঞ্জে মোট ২৩টি বাঁশমহাল রয়েছে। এর মধ্যে রাজকান্দি রেঞ্জে সাতটি, জুড়ী রেঞ্জে সাতটি, বড়লেখায় চারটি ও কুলাউড়া রেঞ্জে পাঁচটি। প্রায় ৪০ হাজার ৫৫ একর বনভূমি এ মহালগুলোর আওতায়।

সিলেট বন বিভাগ গত ২০ এপ্রিল ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাঁশমহালের দরপত্র আহ্বান করেছিল, কিন্তু কোনো নিবন্ধিত মহালদারই অংশ নেননি। ফলে সরকারিভাবে মহাল শূন্য থাকলেও বাস্তবে সেখানে চলছে অবাধ লুট। রাজকান্দি রেঞ্জের লেওয়াছড়া, বাঘাছড়া, কুরমাছড়া, সোনারাইছড়া ও ডালুয়াছড়া মহালে ঘুরে দেখা গেছে, সব মহালেই বনের বাঁশ কেটে ফেলার প্রমাণ। জেলার সবচেয়ে বড় রেঞ্জ রাজকান্দি। এ রেঞ্জে লেওয়াছড়া, চম্পারায়, বাঘাছড়া, ডালুয়াছড়া, কুরমাছড়া, সোনারাইছড়া, সুনছড়া বাঁশমহাল রয়েছে।

জুড়ী রেঞ্জে সুরমাছড়া, রাগনাছড়া, পুটিছড়া, পূর্ব গোয়ালী, ধলাইছড়া, সাগরনাল, হলম্পাছড়া বাঁশমহাল রয়েছে। বড়লেখা রেঞ্জে লাটুছঠা, হাতমাছড়া, নিকুড়িছড়া, মাধবছড়া এবং কুলাউড়া রেঞ্জের পশ্চিম গোগালী, ছোট কালাইগিরি, বেগুনছড়া, লবণছড়া ও বড় কালাইগিরি বাঁশমহাল। ইজারা না থাকায় এসব মহাল থেকে কোটি টাকার বাঁশ নির্বিচারে কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। বনের ভেতর বাঁশমহাল হওয়ায় সাধারণ মানুষের আনাগোনা একেবারেই কম। এ সুযোগে বন বিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাঁশ কেটে বিক্রি করে ছড়ার পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

বাঁশমহালের কয়েকজন সাবেক ইজারাদার বলেন, একটি বাঁশ আমরা বিক্রি করি ২০ টাকায়, কিন্তু সরকারের দরপত্রে যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়, সেটা আমাদের বিক্রি দামের চেয়েও বেশি পড়ে যায়। লাভ তো দূরের কথা, লোকসান নিশ্চিত। চোরাকারবারিরা কেবল বাঁশ চুরি করেই থেমে থাকছে না। চুরির আলামত মুছে ফেলতে তারা অনেক সময় আগুন লাগিয়ে দেয় বনের ভেতরে।

এতে অপরাধের প্রমাণ ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি পুড়ে ছাই হচ্ছে বনাঞ্চলের জীববৈচিত্র্য। শ্রীমঙ্গলের সাগরদীঘি পাড়ের বাঁশ বিক্রেতা সাদিক আলী বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন বাজারে বাঁশ বিক্রি করি। কিন্তু দীর্ঘদিন বাঁশমহালের বাঁশ আমরা কিনতে পারি না। এগুলো বড় ব্যবসায়ীরা লুটে নিয়ে যাচ্ছে।

সিলেট বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ নাজমুল আলম বলেন, ‘বাঁশমহালগুলোর ইজারা না হওয়ার পেছনে কিছু প্রশাসনিক ও আইনি জটিলতা রয়েছে। এখন প্রতিটি মহালের বাঁশের পরিমাণ ও পুনর্জন্ম ক্ষমতা নির্ণয়ের জন্য একটি টিম মাঠে কাজ করছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর টেকসইভাবে যেসব মহাল ইজারা দেওয়া সম্ভব হবে, সেখানে দরপত্র আহ্বান করা হবে। অবৈধভাবে বাঁশ কাটা বা পাচারের বিষয়ে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি।’

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version