ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
ভালুকা উপজেলা বিএনপির রাজনীতি এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। দীর্ঘ সময় ধরে রাজপথের লড়াইয়ে যাঁরা সংগঠনকে টিকিয়ে রেখেছেন, তাঁদের ত্যাগের বিপরীতে নতুন মুখের আবির্ভাব স্থানীয় রাজনীতিতে টানাপোড়েন তৈরি করেছে। এ পরিস্থিতিতে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের আস্থা ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে একটাই নাম রুহুল আমিন মাসুদ।
বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ভালুকা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে বারবার হামলা-মামলা, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন রুহুল আমিন মাসুদ।
তবুও রাজপথ ছাড়েননি, দুঃসময়ে কর্মীদের সঙ্গেই থেকেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিন রাজপথে থাকা, ত্যাগী ভূমিকা এবং ক্লিন ইমেজের কারণে মাসুদই হতে পারেন হাইকমান্ডের প্রথম পছন্দ।
ভালুকার বিএনপির রাজনীতিতে এখন বড় প্রশ্ন ত্যাগী নেতৃত্ব নাকি সুযোগসন্ধানী নেতৃত্ব?
কর্মীদের ভাষায় উত্তর স্পষ্ট। কাচিনা ইউনিয়নের এক সিনিয়র নেতা বলেন, “আমরা যখন মামলার চাপে পালিয়ে বেড়িয়েছি, কারাভোগ করেছি, তখন রুহুল আমিন মাসুদ ভাই আমাদের পাশে থেকেছেন। তাঁর মতো নেতাই সংগঠনকে আবার শক্ত করতে পারবেন।”
রুহুল আমিন মাসুদও এই বিতর্কে খোলামেলা বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, “গত ১৭ বছরে আমরা পরিবারকে সময় দিতে পারিনি, হামলা-গুলির মুখে থেকেও রাজপথ ছাড়িনি। এখন সেই ত্যাগের ইতিহাস মুছে দিয়ে কেউ সুযোগসন্ধানী হয়ে বড় নেতা হওয়ার চেষ্টা করলে তা মেনে নেওয়া হবে না।”
নেতৃত্ব পেলে তিনি কী করবেন সে প্রশ্নে রুহুল আমিন মাসুদ সুস্পষ্ট।
“আমার মূল লক্ষ্য হবে প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে সাংগঠনিক কমিটি শক্তিশালী করা। বিশেষ করে যারা বছরের পর বছর রাজনৈতিক মামলার শিকার হয়েছেন, কারাভোগ করেছেন, হামলার শিকার হয়েছেন এবং নিঃস্বার্থ ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের নিয়েই আমরা নতুন কমিটি গঠন করব। এভাবেই প্রকৃত ত্যাগী নেতাকর্মীদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া সম্ভব হবে,” বলেন তিনি।
এই বার্তা শুধু সাংগঠনিক পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি নয়; বরং ত্যাগী নেতাদের মর্যাদা ফিরিয়ে এনে বিএনপির আগামী প্রজন্মকে সামনে আনার কৌশলও বটে।
স্থানীয় পর্যায়ে কর্মীদের প্রত্যাশা স্পষ্ট হলেও সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের ওপর। প্রশ্ন হচ্ছে হাইকমান্ড কি মাঠের ত্যাগী নেতাদের প্রতি আস্থা রাখবে, নাকি নতুন মুখদের অগ্রাধিকার দেবে?
ভালুকার রাজনীতিতে এই প্রশ্নের উত্তরই নির্ধারণ করবে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের গতিপথ।
সবকিছুর কেন্দ্রে এখন এক নাম রুহুল আমিন মাসুদ। রাজপথের লড়াই, ত্যাগের ইতিহাস এবং ক্লিন ইমেজ তাঁকে শুধু আলোচনায় নয়, বরং ভালুকা বিএনপির রাজনীতির শক্তিশালী দাবিদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এখন দেখার বিষয়, হাইকমান্ড ত্যাগী সৈনিকের হাতে দায়িত্ব তুলে দেয় কি না।