নিজস্ব প্রতিবেদক: সবেমাত্র এইসএসসি পেরিয়ে ডিগ্রিতে যাত্রা শুরু করেছেন। স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করে বাবার সংসারের হাল ধরবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পুরণের আগেই মাত্র ২১ বছর বয়সে তার শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণ ব্যাধি ক্যান্সার।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান জুলহাস মিয়া। তাকে ঘিরে বাবা মায়ের ছিল যত স্বপ্ন কিন্তু দেড় বছর আগে ছেলের মলদ্বারে ক্যান্সার হলে, সব কিছুই যেন উলট-পালট হয়ে যায় তাদের।
জানা যায়, একা-একা চলাফেরা করতে পারে না জুলহাস। গোসল কিংবা খাবার খাওয়া সব কিছু চলে মা-বাবার সহযোগীতায়। কখনও খেতে পারে আবার কখনও পারে না। এভাবেই কষ্টের মধ্য দিয়ে থমকে আছে তার জীবন। মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে দেশের বড় বড় হাসপালের চিকিৎসা শেষ করেছেন তিনি। পেটে পানি চলে আসায় কোন অপারেশন করা হয়নি। এখন শয্যাশায়ী, জুলহাসের দিন-রাত কাটে বিছানায় শুয়ে শুয়ে। দেশবাসির কাছে বাঁচার আকুতি জানায় সে। স্থানীয় সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়ে ডিগ্রি ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সে। সুস্থ হয়ে যেতে চায় কলেজেও।
অসুস্থতার কথা ভেবে কান্নায় ভেঙে পড়ে জুলহাস মিয়া বলেন, বাবা-মা আমাকে নিয়ে অনেক কষ্ট করতেছে। যা কিছু ছিলো, সব কিছুই বিক্রি করেছে আমার চিকিৎসার পিছনে। আমি সবার কাছে দোয়া ও সহযোগিতা চাই। আমি সুস্থ হলে প্রতিবছরই একবার চিল্লাতে যাবো আর পড়াশোনা শুরু করবো।
জুলহাসের বাবা কমল মিয়া বলেন, যা ছিল নিজের সবকিছুই বিক্রি করেছি ছেলের চিকিৎসায়। এখন অটো চালিয়ে দিন-রাত পরিশ্রম করে যা আয় করি, তাতেই কোনোরকমে চালাচ্ছি চিকিৎসা। আবার ঔষধ কিনতে প্রায় সময়ই ঋণ করতে হয় আমাদের।
মা সাবিকুন্নাহার বলেন, গত দেড় বছর ধরে আমার ছেলে অসুস্থ। এর মধ্যে কলেজে গিয়ে ভর্তি হয়ে আসছে। ছেলেকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। আল্লাহর কাছে আমার শেষ চাওয়া, জুলহাস ভালো হয়ে উঠুক। দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে জুলহাস ছোট। যা ছিল সব কিছুই বিক্রি করে দিয়েছি আমরা। বর্তমানে জুলহাসের চিকিৎসা চালাতে আমাদের পক্ষে এখন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তাই সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সাহায্য কামনা করেছেন জুলহাসের পরিবার।