নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় ইটভাটা মালিক সমিতির উদ্যোগে শ্রমজীবী মানুষের জীবিকা রক্ষা এবং জিগজ্যাগ ইটভাটা মালিকদের ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ভাটা চালু রাখার দাবিতে এক প্রতিবাদ মিছিল ও স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকাল ১১টায় মেসার্স শাপলা ব্রীকস এর স্বত্তাধিকারী দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল এর নেতৃত্বে ইটভাটা মালিম শ্রমিকদের একটি বিশাল মিছিল কেন্দুয়া পৌর সদরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে এবং পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেয়।
জানা যায়, বর্তমানে প্রশাসনিক জটিলতার কারণে জিগজ্যাগ ইটভাটার সমস্যার সমাধান আটকে আছে। ভাটামালিকরা আশা করছেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে। ইটভাটা মালিকরা এবং শ্রমিকরা একমত যে, ড্রাম চিমনি ও লাকড়ি দিয়ে ইট পোড়ানোর অবৈধ ভাটাগুলো বন্ধ করা উচিত।
তবে তারা অভিযোগ করেন, বৈধ পদ্ধতিতে পরিচালিত জিগজ্যাগ ইটভাটাগুলোর ওপর প্রশাসন অযৌক্তিকভাবে জরিমানা করছে এবং ভাটা ভাংচুর করছে, যা তাদের জন্য চরম অসুবিধার সৃষ্টি করছে।
ইটভাটা মালিকরা জানান, ২০১৩ সালের ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনে জিগজ্যাগ ভাটাকে বৈধ পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তবে, আইনের ৮(৩)(ঙ) এবং ৮(৩)(খ) উপধারায় “দূরত্ব নির্দিষ্ট” শর্তের কারণে অনেক জিগজ্যাগ ভাটার মালিক ছাড়পত্র এবং লাইসেন্স পেতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর হাইব্রিড কিলন এবং ট্যানেল কিলনের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ এলাকার দূরত্ব ১০০০ মিটার থেকে কমিয়ে ৪০০ মিটার করেছে। ভাটামালিকরা এই দূরত্বের সীমা জিগজ্যাগ ভাটার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য করার দাবি জানিয়ে বলেন, আইনের ৮(৩)(ঙ) ধারায় নিষিদ্ধ এলাকার দূরত্ব ৪০০ মিটার এবং ৮(৩)(খ) ধারায় বনের দূরত্ব ৭০০ মিটার নির্ধারণ করা উচিত।
ভাটামালিকরা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি পরিপত্র জারী করে জিগজ্যাগ ইটভাটার লাইসেন্স ও ছাড়পত্র পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজতর করার দাবি জানান। তাদের মতে, শ্রমজীবী মানুষের জীবিকা রক্ষার জন্য এবং বৈধ ভাটাগুলো চালু রাখার স্বার্থে সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। এছাড়া, তারা বৈধ পদ্ধতির জিগজ্যাগ ভাটাগুলোর ওপর কোনো ধরনের হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানান।
ইটভাটা মালিকদের এই উদ্যোগ শ্রমজীবী মানুষের জীবিকার নিরাপত্তা এবং বৈধ ইটভাটার টিকে থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যার সমাধান করা, যাতে ভাটাগুলোর কার্যক্রম চালু থাকে এবং শ্রমিকরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।