দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কুলাউড়ার ঝুঁকিপূর্ণ রেলপথেই পর্যটকদের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভ্রমণকারীদের সংখ্যা সহস্রগুণ বেড়েছে কিন্তু শতবর্ষী এ রেলপথের কোন দৃশ্যমান উন্নতি হয়নি। সংস্কারের অভাবে দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে কুলাউড়া-শমশেরনগর-ভানুগাছ-শ্রীমঙ্গল হয়ে আখাউড়া পর্যন্ত রেলপথ। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৪১ থেকে ৪২ কিলোমিটার রেলপথে কমপক্ষে আট থেকে দশটি সেতু খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। যা নড়বড়ে নাটবল্টু বিহীন কোন রকম জোড়াতালিতে চলছে রেলপথ।

অন্তর্জাল খুঁজে যতটুকু জানা যায়, আসাম থেকে মালামাল পরিবহনের সুবিধার জন্য আসাম ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষে ১৮৯৮ সালে কুলাউড়া জংশন ও আখাউড়া জংশন হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। খুবই স্বাভাবিক কারণেই আজ থেকে প্রায় ১২৬ বছর আগে তৈরি এ রেলপথ এখন প্রায় সবটাই করুন পরিস্থিতি ও জরাজীর্ণ, প্রাণহানির জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এমতাবস্থায় সিলেট-আখাউড়া রেলপথের কুলাউড়া-শ্রীমঙ্গল অংশে বছরজুড়েই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনায় ভিড় থাকে। আর যাতায়াতের ক্ষেত্রে এসকল ভ্রমণপিপাসু মানুষের একমাত্র ভরসার যাতায়াতস্থল সড়কপথ বা রেলপথ। দেশের সড়কপথ অনেকটাই বিপদসংকুল আর সারাবছর জুড়েই লেগে থাকে অপ্রীতিকর ঘটনাসম্বলীত যাতায়াত। ফলে সড়কপথ নিরাপদও নয় ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য।

আর তাই, ভ্রমণকারীদের পছন্দের পরিবহনের তালিকায় প্রথমেই উঠে আসে রেলপথ। এমনিতেই সংস্কারের অভাবে দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে এ যাতায়াত পথ এর সাথে নতুন নতুন ভ্রমণকারীদের সংখ্যা বেড়ে গিয়ে এ রেলপথকে আরো বেশী ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। কুলাউড়া থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত কমপক্ষে আট থেকে দশটি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।

এছাড়া রেললাইন থেকে প্রতিনিয়তই চুরি হচ্ছে বিভিন্ন যন্ত্রাংশের মধ্যে নাটবল্টু, স্লিপার সহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ। রেল লাইনের টুকটাক দৈনন্দিন মেরামত কাজ করা হলেও নতুন রেললাইন নির্মাণ বা বড় ধরনের মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে এ অঞ্চলে ঘুরে বেড়ানো ভ্রমণকারীদের যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিশেষ করে সিলেট থেকে শায়েস্তাগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

এ পথের বহু জায়গাতেই রেল ধীরগতিতে চলে। আবার কোথাও কোথায়ও দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছের মাঝামাঝি লাউয়াছড়া বনে প্রায় সময়ই থেমে থাকে ট্রেন। উঁচু পাহাড়ি পথ হওয়ায় ইঞ্জিন কন্ডিশনে বেহাল অবস্থার কারণে বগি নিয়ে উঠতে পারে না। মৌলভীবাজার জেলায় বরাবরই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভ্রমনকারীরা আসেন শীতে বা গরমে একটু প্রশান্তির খুঁজে।

কিন্তু রেলপথের ত্রুটির কারণে ট্রেনের নিরাপদ যাত্রাও অনেক সময় ঝুঁকিময় হয়ে উঠে। দৈনন্দিন যাতায়াতকারী কিছু যাত্রীর অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায়, সিলেট-আখাউড়া রেলপথের শ্রীমঙ্গল থেকে কুলাউড়া পর্যন্ত ৮ থেকে ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু রয়েছে। এ জেলায় কমলগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, শ্রীমঙ্গলের চা-বাগান, চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, বড়লেখার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত সহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে আসা ভ্রমণকারীরা এই রেলপথে বেশি ভ্রমণ করেন। অথচ সেই ব্রিটিশ আমলের সোয়াশত বর্ষ আগে তৈরি হওয়া রেল লাইনের নির্মাণের পর আজ অব্দি বড় ধরনের কোনো সংস্কার হয়নি। ফলে দিন দিন যাতায়াতের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।

এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল, ভানুগাছ,শমশেরনগর, মনু, টিলাগাঁও,লংলা,বরমচাল ও কুলাউড়া স্টেশনের মাঝে অনেক স্থানে ক্লিপ-হুক ও নাট-বল্টু নেই। আরও অনেক যন্ত্রাংশ চুরি হওয়ার পরও লাগানো হয় না বলে অভিযোগ আছে। ২০১৮ সালে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সেতু ভেঙে ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হয়। গত বছরও লাউয়াছড়ায় গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে কয়েকটি বগি উল্টে যায়।

রেলপথ ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় এভাবে লাউয়াছড়া উদ্যানের পাহাড়ি এলাকায় নিয়মিত ট্রেন আটকা পড়ে থাকে। দৈনন্দিন রেলপথ ব্যবহারকারী একজন যাত্রীর কথা উল্লেখ করা যায়, তিনি তার অভিজ্ঞতার কথা এভাবেই ব্যক্ত করেন-“সোয়াশত বছরের পুরোনো রেললাইন কেবল মেরামত করেই চালানো হচ্ছে।

অথচ এ লাইনে রেলের আয় সহস্রকোটি টাকা। আয়ের এ বিশাল অর্থের অতি ক্ষুদ্রাংশও রেলের উন্নয়নে খরচ করা হয় না। আয়ের সবটুকুই লুটেপুটে খাওয়া হয়।” রেলওয়ের কুলাউড়া জংশনের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হক সংবাদমাধ্যমকে বলেন যে, তারা যতটুকু সম্ভব রেললাইন নিরাপদ রাখার চেষ্টা করে যান। মাঝেমধ্যে নাট-বল্টু, ক্লিপ চুরি হলেও আবার লাগানো হয়। এদিকে, শ্রীমঙ্গল রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল্লাহ বলেছেন, শতবর্ষী পুরানো সেতুগুলো মেরামত করা হচ্ছে।

পর্যায়ক্রমে সব ক’টি সেতুই মেরামত করা হবে। নেতীজনদের মন্তব্য জানা যায়, কতৃপক্ষের কিছু কর্মকর্তারা এভাবেই দ্বায় সারা বক্তব্য প্রদান করেই থেমে যায়। এভাবে আর কত বছর, মাস এবং আর কত প্রাণ হারিয়ে গেলে এর সংস্কার করবেন নীতিনির্ধারকরা!

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version