হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি ভিডিওতে একজন নারীকে কাঁদতে দেখা যায়। এক ছেলেকে জড়িয়ে কান্নারত অবস্থায় তিনি বলছিলেন, ‘কি করছে, কি করছে রে.
মুহূর্তেই ভিডিওটি ভাইরাল হয় ফেসবুকে। এতে এক নারী তার ছেলেকে মারধরের অভিযোগ তোলেন বিমানবন্দরে কর্তব্যরত বিমান বাহিনী, এভিয়েশন সিকিউরিটি (এভসেক) ও আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে। ভিডিওতে ছেলের মুখ ফোলা ও বাম চোখে রক্ত জমাট বাধা দেখা যায়।
ওই নারী ভিডিওতে অভিযোগ করেন, অতর্কিতভাবে বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা তার ছেলেকে মারধর করেছেন।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৯টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক আগমনী কেনপি-২ এর সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, দেশে আগত ২ জন যাত্রীর সঙ্গে একজন বিমানবাহিনীর সদস্যের তর্ক হয়। একপর্যায়ে যাত্রী ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় এক যাত্রী ও বিমানবন্দরের একজন নিরাপত্তা সদস্য আহত হয়েছেন। পুরো ঘটনা জানাজানির আগেই গোটা নেট দুনিয়ায় মারধরের বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং প্রাথমিক তদন্ততে জানা যায়, বাংলাদেশে আসা ৫ জন যাত্রীর একটি দল বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম শেষ করে লাগেজ নিয়ে কেনপি ২ এলাকা দিয়ে বের হচ্ছিলেন। এসময় ১ জন যাত্রী ট্রলি সহ কেনপি ২ এর গেট এর ঠিক সম্মুখভাগে দাঁড়িয়ে থেকে অন্য যাত্রীদের চলাফেরায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছিল।
ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, একই সময় বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের চাপ ছিল। সেসময় একজন নিরাপত্তাকর্মী ওই যাত্রীকে ট্রলিসহ কিছুটা সরে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করলে তিনি তাতে কর্ণপাত না করে দাঁড়িয়ে থাকেন। কিছুক্ষণ পরে সেই নিরাপত্তাকর্মী পুনরায় ওই যাত্রীকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে গেলে তিনি প্রচণ্ড রাগান্বিত হয়ে পড়েন, এরপর একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দুইপক্ষের বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে একজন নিরাপত্তাকর্মী ওই যাত্রীকে শান্ত করার চেষ্টা করলে একপর্যায়ে যাত্রীর ছেলে (একই ফ্লাইটের যাত্রী, যিনি পেছনে অবস্থান করছিলেন) ঘটনাস্থলে এসে বিমান বাহিনীর ওই নিরাপত্তাকর্মীকে শারীরিকভাবে আঘাত ও লাঞ্ছিত করেন। যাত্রীরা ওই নিরাপত্তাকর্মীকে কিলঘুষি মারা শুরু করলে তাদের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি হয় এবং ওই নিরাপত্তা কর্মী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেখানে দায়িত্বরত আনসার এবং এভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যরা এগিয়ে এলে নিরাপত্তা কর্মীদের ওই দুইজন যাত্রীর হাত থেকে মুক্ত করা হয়।