নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে বিল পাসের ক্ষেত্রে পার্সেন্টিস নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে আলাপচারিতায় কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হুমায়ূন দিলদার অভিযোগ করেন, উপজেলায় কৃষি উন্নয়ন ও প্রদর্শনীগুলোর জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ করা হবে। কিন্তু উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া বিলের ক্ষেত্রে পার্সেন্টিস দাবি করা হচ্ছে। যা সরাসরি কৃষকদের প্রাপ্য থেকে কেটে নেওয়া হলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
তিনি আরও জানান, নিয়মবহির্ভূত কোনো অর্থ প্রদান তিনি করবেন না এবং বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অবহিত করেছেন।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে কৃষি ও হিসাব রক্ষণ অফিস নড়েচড়ে বসেছে বলে জানা গেছে।
পাল্টা অভিযোগ তুলে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের একাধিক সূত্র জানায়, এ ধরনের বিল ও ভাউচারের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনৈতিক পার্সেন্টেজ চাওয়ার সুযোগ নেই। তারা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কাজ করে থাকেন এবং সেই নিয়ম মেনেই বিল যাচাই-বাছাই করা হয়।
হিসাব রক্ষণ অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, কৃষি কর্মকর্তার পাঠানো বিলে অসংগতি ছিল। প্রকল্পের ডিপিপি সরবরাহ করা হয়নি, দরদাতার ট্রেড লাইসেন্স এবং টিন নম্বর প্রদান করা হয়নি, যা নিয়মমাফিক প্রয়োজনীয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট নোটিশ ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে কৃষি কর্মকর্তাকে পাঠানো হলেও, তিনি এখনও এর কোনো উত্তর দেননি। নিয়ম মেনে বিল সাবমিট করা না হলে তা পাসের প্রশ্নই ওঠে না বলে তারা উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার জানান, “বিষয়টি নিয়ে আমরা কর্মকর্তা পর্যায়ে শীঘ্রই বসে একটি সিদ্ধান্ত নেবো। কোনো পক্ষের অভিযোগ উপেক্ষা করা হবে না এবং সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই বিষয়টির সমাধান করা হবে।”
পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন দিলদার বলেন, “আমার কাছে সরাসরি কেউ ঘুষ চায়নি। গণমাধ্যমে আমার বক্তব্য অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এখন ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে।”
এ ঘটনায় কৃষি ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার পাল্টা অভিযোগের কারণে কেন্দ্রীয়ভাবে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। উভয় পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।