শীত এলেই বিয়ের ধুম পড়ার কারণ হলো এই মৌসুমটি বিয়ের জন্য একদম আদর্শ মনে করা হয়। অনেকেই শীতকালকেই বিয়ের জন্য বেশি পছন্দ করেন, কারণ এতে আয়োজন আরামদায়ক ও উপভোগ্য হয়ে ওঠে। শান্ত-শিষ্ট এই ঋতুতে যেখানে থাকে না প্রখর রৌদ্র কিংবা মেজাজ খারাপ করা গরম।তবে শীতে বিয়ে করলে পাত্রপক্ষ বা পাত্রীপক্ষ উভই পক্ষেই রয়েছে বেশকিছু সুবিধা।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যায় সুবিধাগুলো:-
১. আবহাওয়ার আরামদায়কতা
শীতকালে আবহাওয়া সাধারণত ঠান্ডা থাকে, যা বিয়ের পোশাক পরা, বিশেষ করে ভারী শাড়ি, লেহেঙ্গা, বা শেরওয়ানি পরার ক্ষেত্রে আরামদায়ক হয়। গরমের চেয়ে শীতে দীর্ঘ সময় ধরে সাজসজ্জা ও পোশাক পরা সহজ।
২. মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী থাকে
ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে মেকআপ সহজে গলে যায় না, ফলে সারা দিন বা রাতজুড়ে সাজ ঠিক থাকে। ছবি তোলার সময়ও সৌন্দর্য বজায় থাকে।
৩.দীর্ঘ ছুটি: শুরুতেই বলে রাখা ভালো, বিয়ের জন্য কিছুদিন সময় দরকার হয়। আর বছরের শেষেই মেলে টানা ছুটি। আর নভেম্বর-ডিসেম্বরেই আগমন ঘটে শীতের। তাই নভেম্বর-ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে পড়ে যায় বিয়ের হিড়িক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক অফিস-আদালতেও বছরের শেষে দেখা মেলে ছুটির। সেই ছুটির সদ্ব্যবহার করেন অনেকেই। আর ছুটির সুযোগে পরিবারের সবাই মিলেই বিয়ের আয়োজন আনন্দের সাথে করতে পারে।
৪. খাবারের মান বজায় থাকে:
শীতে খাবার সহজে নষ্ট হয় না এবং বিভিন্ন রকমের মেনু রাখতে সুবিধা হয়। গরমে খাবার দ্রুত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যা শীতে এড়ানো যায়। ফলে পোলাও, কাবাব, বিরিয়ানি সহ আরও অনেক ভারী খাবার মেনুতে রাখা যায়।
৫. ফটোশুটের সুবিধা: শীতের উজ্জ্বল আলো এবং ঠান্ডা পরিবেশ ফটোশুটের জন্য আদর্শ।
৫.তুলনামূলক খরচ কম: শীতকালে বিয়ে হলে ফ্যান চালাতে হয় না। শীতে বেশি ফল পাওয়া যায় না বলে বিয়েতে ফলের খরচ কমে যায়। শীতে দিনের দৈর্ঘ্য কম হওয়ায় বিকেলের মধ্যে আত্মীয়দের খাওয়ানোসহ সব কাজ সেরে নেয়া যায়। এতে টাকা পয়সার অপব্যবহার বা অতিরিক্ত কোনো খরচ হয় না। এছাড়া খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনেও পানীয়ের ব্যবহার কম হয়।
৬.মশারি টানানোর ঝামেলা নেই : বিয়ের আয়োজনে সাধারণ বাড়িতে বহু মানুষের উপস্থিতি থাকে। কিন্তু একটি পরিবারে অতিরিক্ত মশারি তেমন থাকে না। তাই শীতের সময় বিয়ে হলে সুবিধা, বেশিরভাগ সময় মশারি দরকার হয় না। এমনিতে মশা কম থাকে। আবার অনেকে লেপ-কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমালে মশা কামড়ানোর সুযোগ নেই।
৭.জম্পেশ হানিমুন: ভালো-মন্দ মিলিয়ে শীতের সময়টা ঘোরাঘুরির জন্য একেবারে পারফেক্ট। নবদম্পতির জন্য একসাথে ছুটি কাটানোর অর্থাৎ হানিমুনের জন্য সবথেকে ভালো সময় এটি। শীতকালে বিয়ে এবং এর পরে হানিমুনে ঘোরাঘুরিটা জমে বেশ। পরস্পরের পাশাপাশি থেকে উষ্ণতাও ভাগাভাগি করা যায়, সেই সুযোগে সঙ্গীকে চিনে নেয়া যায়, জেনে নেয়া যায়। আবার হোটেলসহ সব জায়গায় কাপল প্যাকেজ থাকায় নব-বিবাহিতরা অনেক সুবিধা পেয়ে থাকেন। তাই বিয়ে এবং হানিমুনের জন্য শীতের সময়টাই উপযুক্ত।
সব মিলিয়ে, শীতে বিয়ের আয়োজন করা আরামদায়ক ও স্মরণীয় হয়ে ওঠে।যে কারণে প্রতি বছর শীতে একটা বিয়ের হিড়িক পড়ে।
এবি হান্নান / লাইফস্টাইল